কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের গোমা কারাগারে ১৫০ জনের বেশি নারী বন্দিকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পালিয়ে যাওয়া পুরুষ বন্দিরাই এই নৃশংস ঘটনার জন্য দায়ী বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র সাইফ ম্যাঙ্গাঙ্গো সিএনএনকে জানান, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের হাতে ধর্ষণের শিকার হন ১৬৫ জন নারী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই পরে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।
তিনি আরও জানান, সেই আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া ৯ থেকে ১৩ জন নারী বন্দিও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। কঙ্গোর বিচার বিভাগের একটি সূত্র থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ম্যাঙ্গাঙ্গো বলেন, “আমরা স্বাধীনভাবে এই প্রতিবেদন যাচাই করিনি। তবে এটি নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করছি।”
জাতিসংঘের সহযোগী গণমাধ্যম রেডিও ওকাপি জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি যখন এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোর সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছিল, তখন মুজেঞ্জে কারাগার থেকে ৪,০০০-এর বেশি বন্দি পালিয়ে যায়।
এ সময় তাদের থামানোর চেষ্টা করলে কিছু বন্দিকে গুলি করে হত্যা করা হলেও বেশিরভাগই পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই ঘটনার পর পুরো কারাগারটি ধ্বংস হয়ে যায়।
কঙ্গোর যোগাযোগমন্ত্রী প্যাট্রিক মুইয়া ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “সরকার এই বর্বর অপরাধের তীব্র নিন্দা জানায়।”
মধ্য আফ্রিকার এই দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলতে থাকায় যৌন সহিংসতা একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের আরেক মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানান, কঙ্গোর সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্র বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও ৫২ জন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, যার মধ্যে বেশ কয়েকটি গণধর্ষণের ঘটনা রয়েছে।
এদিকে, বিদ্রোহীগোষ্ঠী এম২৩ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। তারা দাবি করেছে, বর্তমানে গোমা তাদের নিয়ন্ত্রণে।সাম্প্রতিক সংঘর্ষে প্রায় ৩,০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।