দুমকিতে পায়রা নদীর
কামাল হোসেন বিশেষ প্রতিনিধ:
পটুয়াখালীর দুমকিতে পায়রা নদীর ভাঙন থেকে আলগী গ্রাম রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার ( ১৬ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগী গ্রামের পায়রা নদীর পাড়ে এ মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এ মানববন্ধনে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)’র পটুয়াখালী জেলা শাখার সদস্য সচিব, প্রকৌশলী মোঃ কামাল হোসেন, ইউপি সদস্য সরোয়ার শিকদার, সাবেক ইউপি সদস্য সুলতান তালুকদার, স্থানীয় বাসিন্দা জাকির বিশ্বাস, মো: সুমন হাওলাদার, প্রেসক্লাব দুমকি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক জসিম উদ্দিন, মাওলানা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পায়রা নদীর স্রোতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় লেবুখালী থেকে আলগী গ্রামের প্রায় ২ কিলোমিটার ওয়াপদা বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে পুরো আলগী গ্রামে ভাঙনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙনের মুখে নদী তীরে বসবাস করা পরিবারগুলো তাদের সম্বল বলতে বসতঘর ও মালামাল রক্ষায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার পরিবারগুলোর নারী, পুরুষ, শিশু-কিশোর সবাই নিজেদের মালামাল বহন করে কাছের সরকারি রাস্তার ওপর স্তুপ করে রাখছেন। নদী ভাঙ্গনে অন্তত: শতাধিক পরিবার এখন নি:স্ব হয়ে পরেছেন। আলগী গ্রামের পায়রা তীরবর্তী ভাঙনকবলিত এলাকার সবার চোখেমুখে শুধুই আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, বিগত ৫-৬ বছরে প্রায় দু’শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি, ফসলি জমি, গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পায়রা নদীর ভাঙনে অন্তত শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি, বাগান, করবস্থান, মসজিদ, মন্দির, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও তাদের তেমন কোনো খোঁজখবর নেননি। অসহায় পরিবারগুলোর বেশিরভাগই পাউবোর ওয়াপদা ভেড়িবাঁধের পাশের ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্য শহরে চলে গেছে।
পাঙ্গাশিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এড. গাজী নজরুল ইসলাম নদী ভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পায়রা নদীর ভাঙনে তার ইউনিয়নের আলগী গ্রামটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। যেটুকু অবশিষ্ট ছিল তাও ভাঙতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পরিষদের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। তিনি আরও বলেন, ভিটেবাড়ি ও সহায়-সম্বলহীন পরিবারগুলোকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারি সুবিধাও দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুজর মো: এজাজুল হক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছেন দুএকদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন হবে।