BMBF News

সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণসহ ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির

৩৬১
নিজস্ব প্রতিবেদক :

 

সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, অনতিবিলম্বে ৯ম পে ফেল ঘোষণা ও পে স্কেল ঘোষণার আগেই ৫০ % মহার্ঘ ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন। ৮ই এপ্রিল শনিবার সকলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকুরী ননভ্যাকেশনাল হিসেবে গণ্য করা, পদোন্নতির সকল প্রকার জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান, চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং প্রধান শিক্ষকদের সিনিয়রিটি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে পরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতির দাবি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো:গাজীউল হক চৌধুরী বলেন, ইউআরসি’র ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার একটি প্রস্তাব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের নিকট প্রেরণ করা হয়। ইউআরসির ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা কোন একাডেমিক পদধারী কর্মচারী নন। সে কারণে ইউআরসির ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা কোনোভাবেই ‘একাডেমিক ট্রেইনার’ বা ‘একাডেমিক সুপারভাইজারের কোনো পদে চলতি দায়িত্ব বা পদোন্নতি পাওয়ার অধিকারী নয়। ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পদটি ১৯৯৮ সালে তৎকালীন আইডিয়াল ও নোরাড প্রকল্পের অধীনে ১৬তম। গ্রেডের একটি প্রকল্পভুক্ত পদ। পরবর্তীতে তাদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত করা হয়। একজন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড ১১তম এবং সহকারী শিক্ষকের গ্রেড ১৩তম। প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া বা বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সরকারকে ফিডব্যাক দেওয়া ইত্যাদি কাজে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরগণ পদোন্নতি পেতে পারেন না। সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদে অবশ্যই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পদোন্নতি দিতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৬/০১/২২ তারিখের পত্রে উল্লেখ রয়েছে সমপদধারীদের অব্যবহিত পরের পদকে চলতি দায়িত্ব দেয়া যায়। কিন্তু ৫ গ্রেড ব্যবধানের কোন কর্মচারীকে সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া যায় না।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন দাবিগুলো হলো :

১। সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত না পদোন্নতিপ্রাপ্ত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না প্রশিক্ষণ বিহীন ইত্যাদি কোন প্রকার বৈষম্য রাখা যাবে না। একই সাথে প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল প্রাপ্তির সকল জটিলতা নিরসন করতে হবে।

২। উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখের প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।

৩। প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহকে ভ্যাকেশনাল ডিপার্টমেন্ট আখ্যায়িত করে অন্যান্য শিক্ষা বিভাগের তুলনায় ছুটি কমিয়ে দেওয়া বৈষম্যমূলক। আমরা প্রাথমিক শিক্ষকরা ছুটিও চাইনা, ভ্যাকেশনাল হিসাবেও থাকতে চাই না। অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মত ছুটি রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকুরী ননভ্যাকেশনাল হিসেবে গণ্য করতে হবে।

৪। পদোন্নতির সকল প্রকার জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান ও চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং প্রধান শিক্ষকদের সিনিয়রিটি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে পরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি দিতে হবে।

৫। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির সাথে সমন্বয় রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে ৯ম পে স্কেল ঘোষণা করতে হবে এবং ৯ম পে স্কেল ঘোষণার আগেই ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম তোতা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ গাজীউল হক চৌধুরী। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুব্রত রায়। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ সভাপতি কামরুল হাসান ভূইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁঞা, সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী প্রামানিক, মহিলা সম্পাদিকা বাধন খান পাঠান ববি, সহ সভাপতি ফজলুর রহমান, মীর মহিবুর রহমান, মুন্সি জাহিদুল হক, মঈনুল ইসলাম, আব্দুস ছালাম, মো. ইউসুফ, নুরুল আবছার, আরিফ দেওয়ান, দপ্তর সম্পাদক কামাল বকশী, ধামরাই উপজেলা সভাপতি মো. রবিউল করিম প্রমুখ।