চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমীর প্রয়াত শাহ আহমদ শফী এবং জুনায়েদ বাবুনগরীর কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ।
নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে বিএনপি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চায়, সেই বার্তাই তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে দিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে হাটহাজারী উপজেলায় আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় গিয়ে মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেশী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিএনপি নেতা নজরুল বলেন, “আপনারা জানেন, বিএনপির নেতৃত্বেই বিগত ১৬ বছর ধরে বিরোধী দলগুলো আন্দোলন চালিয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি শহীদ, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মামলা-হামলার শিকার হয়েছে বিএনপি। সবাইকে সাথে নিয়ে বিএনপি এ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে গেছে।”
“আমরা আজ মুরব্বিদের (হেফাজত নেতা) বললাম, শহীদ জিয়া সবাইকে নিয়ে কাজ করতেন। বেগম খালেদা জিয়াও সবাইকে নিয়ে জোটবদ্ধভাবে কাজ করতেন।”
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা যুক্ত ছিলেন, তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা তুলে ধরে নজরুল বলেন, “২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যে মর্মান্তিক ঘটনা ও যে হত্যাযজ্ঞ, তার শিকার যারা, তার মূল নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম। যারা মূল নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, মওলানা আহমদ শফী সাহেব এবং মওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেব, তাদের কবর জিয়ারত করে আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।
“এখন যারা দায়িত্বশীল আছেন এই মাদ্রাসায় তাদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তাদের যে অবদান সেটা আমরা স্বীকার করি।”
হাটাহাজারি মাদ্রাসা সফর শেষে বিএনপি নেতৃবৃন্দ ফটিকছড়ি বাবু নগর আল জামিয়াতুল ইসলামীয়া আজিজুল উলুম মাদ্রাসাতেও যান।
এর আগে গত ২০ জুলাই চট্টগ্রামে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচিতে এসে হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
নির্বাচন প্রসঙ্গ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ‘না হওয়ার’ কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।
‘নির্বাচন না-ও হতে পারে’–এমন দুশ্চিন্তার কারণ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা অপেক্ষা করছি, সরকার এ ব্যাপারে শিগগিরই তাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য নিয়ে আসবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সে অনুযায়ী পরামর্শ দেবে।”
নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ‘দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক’ একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং একটি গণতান্ত্রিক সরকার যদি প্রতিষ্ঠা করা না যায়, তাহলে অভ্যুত্থানের শহীদ আর নিপীড়িত মানুষের আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেন নজরুল।
তিনি বলেন, “সেজন্য আমরা আশা করি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কার্যক্রমটা দ্রুততর হবে। নির্বাচন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সবকিছুই মানুষের জন্য, জনগণের কল্যাণের জন্য।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ শুক্রবার হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় গিয়ে মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেশী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সালাহউদ্দিন আহমদ শুক্রবার হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় গিয়ে মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমেদ কাশেশী এবং শায়খুল হাদীস শেখ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
জুলাই সনদ
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন থেকে সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছিল। জুলাই সনদের যেসব সুপারিশ ঐক্যমতের ভিত্তিতে সবাই গ্রহণ করেছে, সেগুলো যুক্ত করে সনদ চূড়ান্ত হবে।
“এ সনদে যেসব সুপারিশ থাকবে সেগুলো দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে বলে সব রাজনৈতিক দল প্রতিশ্রতি দিয়েছে।”
তিনি বলেন, “ঐক্যমত্য কমিশন এ ব্যাপারে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি চেয়েছিল। আমরা সেটা করেছি। এটা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান, আইন ও বিধিবিধানের যেসব সংশোধনী প্রয়োজন হবে, সেগুলো আমরা করব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
ঐক্যমত্য কমিশনের সংস্কারের ৮২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ৫১টি বাদে বাকি সবগুলোতে বিএনপি একমত হয়েছে। ১১৫টি প্রস্তাবে ভিন্নমত দিয়েছে বলে জানান দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা পাননি বলেও তিনি দাবি করেন।