BMBF News

আখেরি মোনাজাতে শান্তি ও কল্যাণ কামনা

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করলেন লাখো মানুষ, যার মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। মোনাজাতে বিশ্বের মুসলিমদের ঐক্য, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।

রবিবার শুরায়ে নেজাম (জুবায়ের) অনুসারীদের ইজতেমার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ। সকাল ৯টা ১১ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত মোনাজাত চলে।

মোনাজাতে মুসলমানদের হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং দ্বীনের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ।

এর আগে বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান হেদায়তি বয়ান করেন; তা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন। বয়ানে যারা বিশ্ব ইজতেমা ময়দান থেকে জামাত গঠন করে দ্বীনের কাজে বের হবেন এবং যারা মহল্লায় ফিরে যাবেন, তাদের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।

হেদায়তি বয়ানের পর ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক বয়ান করেন, যা বাংলায় তরজমা করেন মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।

মোনাজাতে অংশ নিতে রবিবার ফজরের নামাজের পর থেকেই আশপাশ এলাকার মানুষ ইজতেমা ময়দানের দিকে রওনা দেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়কে মানুষের স্রোত বাড়তে থাকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই হাজারো মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নেমে আসেন।

ভোগড়া বাইপাস থেকে ইজতেমা মাঠ পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ বহু মানুষ পায়ে হেঁটে অতিক্রম করেন, কারণ বিপুল জনসমাগমের কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। মোনাজাতের আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

একপর্যায়ে ময়দানের আশপাশের অলিগলি, সড়ক, বাসাবাড়ি, কলকারখানার ছাদ, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার ফ্লাইওভারের উপর, টঙ্গী-ঘোড়াশাল ও কামারপাড়া সড়কে অবস্থান নিয়ে মোনাজাতে অংশ নেন অসংখ্য মানুষ। তুরাগ নদে নৌকায় বসে ও যানবাহনের ছাদেও মোনাজাতে অংশ নিতে দেখা যায় অনেককে।

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শত শত নারী ইজতেমা ময়দানের আশপাশ, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির ছাদসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশের তাবলিগ জামাতের ৩ হাজার ২০০ বিদেশি মেহমান এবারের ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে শুক্রবার বাদ ফজর আম বয়ানের মাধ্যমে শুরু হয় বিশ্ব ইজতেমা। শুরায়ে নেজাম (জুবায়ের) অনুসারীদের এবারের বিশ্ব ইজতেমা দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

দ্বিতীয় দফার ইজতেমা শুরু হবে সোমবার, যা বুধবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। এরপর ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ইজতেমা।