BMBF News

ইজতেমা মাঠের দখল নিয়ে রাতভর সংঘর্ষ, নিহত ৩

গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও সাদ অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে তিন মুসল্লি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের আমিনুল ইসলাম বাচ্চু (৭০), রাজধানীর দক্ষিণ খানের আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০), এবং বগুড়ার বাসিন্দা তাইজুল ইসলাম।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮), গাজীপুরের আব্দুল হান্নান (৬০), টঙ্গীর জহুরুল ইসলাম (৩৮), প্রান্ত (৫৫), গোপালগঞ্জের আরিফ (৩৪), সাভারের ফয়সাল (২৮), আরিফুল ইসলাম (৫০), আনোয়ার (২৬), নরসিংদীর তরিকুল (৪২), চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪), কেরানীগঞ্জের খোরশেদ আলম (৫০), এবং নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার (৫০)। বাকিদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-টঙ্গী জোন) এন এম নাসিরুদ্দিন জানান, “এ ঘটনায় আমরা এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এর মধ্যে একজন টঙ্গী হাসপাতালে এবং আরেকজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

টঙ্গী হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে আহত ৩৯ জনকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১১ জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে দুইজন মারা গেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী শুক্রবার থেকে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিনব্যাপী ইজতেমা আয়োজনের পরিকল্পনা ছিল মাওলানা সাদ অনুসারীদের। কিন্তু মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা তাদের সেখানে ইজতেমা করতে দিতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছিল।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাদ অনুসারীরা চারদিক থেকে মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে জুবায়ের অনুসারীরা মাঠ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন।

মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী মো. আবুল বাশার বলেন, “আমরা গেটে পাহারা দিচ্ছিলাম। রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাদ অনুসারীরা লাঠি ও রড নিয়ে মাঠে প্রবেশ করে আমাদের ওপর হামলা চালায়।”

অন্যদিকে মাওলানা সাদ অনুসারীদের পক্ষ থেকে মো. সায়েম দাবি করেন, “রাতে আমাদের মাঠে ঢোকার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের সাথিরা এসে জায়গা না পেয়ে আশপাশে অবস্থান নেন। হঠাৎ জুবায়ের অনুসারীরা ঢিল ছুড়তে শুরু করলে আমাদের সাথিরা বাধ্য হয়ে মাঠে প্রবেশ করেন।”

সংঘর্ষের পর ইজতেমা মাঠে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।