একটি লোক নির্বাচন চান না, তিনি ড. ইউনূস: মির্জা আব্বাস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, খুব দুঃখের সঙ্গে বলছি, দেখলাম ইউনূস সাহেব জাপানে বসে বিএনপির সম্পর্কে বদনাম করছেন। একটু লজ্জাও লাগলো না, দেশের সম্পর্কে বিদেশে বসে বদনাম করতে? তিনি বললেন, ‘একটি দল নির্বাচন চায়, আর কেউ চায় না’।

আর আমরা (বিএনপি) বলতে চাই, একটি লোক নির্বাচন চান না, তিনি হলেন ড. ইউনূস। উনি নির্বাচন চান না।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে তার সমাধিতে দলের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা আব্বাস উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আজকে জাতিকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করতে হবে বিভিন্ন কারণে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন, সংস্কার সংস্কার করতে করতে বর্তমান সরকার বিদেশ থেকে বহু লোককে আমদানি করেছে। আমি আজকে অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহু সংস্কার করেছেন বাংলাদেশে। কিন্তু উনি বিদেশ থেকে কোনো পরামর্শক আনেনি। উনি দেশে থেকেই যে সংস্কার করা দরকার তা করেছেন, বিদেশ থেকে কাউকে আমদানি করেননি। আজকে এই সরকার কিছু বিদেশি লোককে আমদানি করেছে, কিছু সংস্কার করার জন্য। আবার এই সংস্কার সংস্কার করতে করতে এমন জায়গায় চলে গেছে, যে তারা আজকে আর নির্বাচন দিতে চায় না।

মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি বরাবরই নির্বাচন চেয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে। এই ডিসেম্বরের কথা কিন্তু ইউনূস সাহেব স্বয়ং বলেছেন, আমরা বলি নাই। এটা তারই প্রস্তাব। পরবর্তীতে তিনি শিফট করে চলে গেলেন জুন মাসে। জুন মাসে যে নির্বাচনের কথা তিনি বলেন, এই নির্বাচন বাংলাদেশে কখনো হবে না। সুতরাং নির্বাচন যদি করতে হয়, ডিসেম্বরের মধ্যে করতে হবে। আর যদি নির্বাচন করতে না চান, সেটা ইউনূস সাহেবের দায়-দায়িত্ব, আমাদের দায়-দায়িত্ব নয়। আমরা, জাতি ও বাংলাদেশের জনগণ এই নির্বাচন আদায় করবে।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজকে ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। আমি এই শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর দোয়া কামনা করছি। আল্লাহ তা’আলা যেনো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বেহেশত নসিব করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক দিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বিএনপি। এ সময় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সালাহউদ্দিন আহমদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা দোয়া ও মোনাজাত করেন।

বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদনের পর একে একে পুষ্পস্তবক দিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল, ঢাকা মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (জেটেব), জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব), বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক জাতীয়তাবাদী ফোরাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশসহ (অ্যাব) বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।