আলোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম), তার পরিবার ও কোম্পানির নামে থাকা ১৭৫ বিঘা জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন জানান, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
ক্রোক করা সম্পত্তির মধ্যে চট্টগ্রামের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দশমিক ১৬৩৭ একর জমি রয়েছে, যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। একই ওয়ার্ডে দশমিক ১৩৫০ একর জমির মূল্য ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
চট্টগ্রামের ১ নম্বর পাথরঘাটা ইউনিয়নে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ জমির বাজারমূল্য ৩ কোটি ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা। একই ইউনিয়নে দশমিক ৯০ একর জমির মূল্য ৩৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা এবং ১ দশমিক ২০ একর জমির মূল্য ৬০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এস আলম কোল্ড স্টিল লিমিটেডের ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে পটিয়া উপজেলায় ৬ শতক জমি রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৩০ হাজার টাকা। পটিয়ার শিকলবাহা ইউনিয়নে ৪০ শতক জমির মূল্য ২১ লাখ টাকা। একই এলাকায় ২৮ শতক জমির মূল্য ১৪ লাখ টাকা, সাড়ে ৪১ শতক জমির মূল্য ২১ লাখ টাকা, ২৬ শতক জমির মূল্য ১৩ লাখ টাকা, ৩২ শতক জমির মূল্য ১৬ লাখ টাকা, ৮০ শতক জমির মূল্য ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১৪ শতক জমির মূল্য ৮০ হাজার টাকা এবং ৬ শতক জমির মূল্য ৩০ হাজার টাকা।
শিকলবাহা এলাকায় আরও ১৮ দশমিক ৫০ শতক জমির বাজারমূল্য ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৬ শতক জমির মূল্য ৩ লাখ টাকা, ১৫ শতক জমির মূল্য ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫৭ দশমিক ৫০ শতক জমির মূল্য ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১২ শতক জমির মূল্য ৬০ হাজার টাকা এবং ৫ শতক জমির মূল্য ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জে স্যাভোলা অয়েল লিমিটেডের ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে এক দশমিক ৩৮৫০ একর জমি ও দুই হাজার বর্গফুটের সেমিপাকা ঘর রয়েছে, যার বাজারমূল্য ১২ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া দুই একর জমির মূল্য ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, ৩৬ দশমিক ৩৬ শতক জমির মূল্য ১ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার টাকা, ৩৪ দশমিক ৬৯ শতক জমির মূল্য ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ১৮২ দশমিক ৪৪ শতক জমির মূল্য ৬ কোটি ৮ লাখ ৯ হাজার টাকা, ৩৮২ শতক জমির মূল্য ১২ কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা এবং ২১৮ দশমিক ৯১ শতক জমির মূল্য ৭ কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডেল্টা অয়েল লিমিটেডের ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে ১২১ দশমিক ৫১ শতক জমি ও ১৫০০ বর্গফুটের পাকাঘর রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৭ কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ১৭ শতক জমি ও ৫০০ বর্গফুটের সেমিপাকা ঘরের মূল্য ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩৬ দশমিক ৫০ শতক জমির মূল্য ৭৩ লাখ টাকা এবং ১৬৩ দশমিক ৫২ শতক জমির মূল্য ৬ কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
সানম্যান টেক্সটাইল মিলসের ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে ১৮৯ শতক জমির বাজারমূল্য ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা এবং ১৪৬ শতক জমির বাজারমূল্য ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।
এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেডের ক্রোক হওয়া সম্পত্তির মধ্যে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকায় ৯৪৩ শতক জমির মূল্য ১৫৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং একই এলাকায় আরও ৯৪৩ শতক জমির মূল্য ৮২ কোটি ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাইফুল আলমের নামে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকায় ৪৭০ শতক জমির মূল্য ৫ লাখ টাকা। ঢাকার গুলশানে তার নামে ১০ কাঠা জমির মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
ঢাকার তেজতুরি বাজারে ইনহেরেন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড ইমপ্লেক্সের ৯০ দশমিক ৮৮ শতক জমি ও ৩০০০ বর্গফুটের একতলা দালানের বাজারমূল্য ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
ঢাকার ধানমন্ডিতে ব্লাইন্ড লিমিটেডের ১ বিঘা জমিও ক্রোকের তালিকায় রয়েছে। সব মিলিয়ে এসব সম্পত্তির বাজারমূল্য ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা দেখিয়েছে দুদক। এর আগে গত ৭ অক্টোবর দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে এস আলম ও তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তিরা হলেন সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীন, দুই ছেলে আশরাফুল আলম ও আহসানুল আলম; ছয় ভাই মোরশেদুল আলম, সহিদুল আলম, রাশেদুল আলম, আবদুস সামাদ, ওসমান গণি ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান। এছাড়া আবদুস সামাদের স্ত্রী শাহানা ফেরদৌস, ওসমান গণির স্ত্রী ফারজানা বেগম এবং মিশকাত আহমেদও দেশত্যাগ করতে পারবেন না।