BMBF News

গাজায় ইসরায়েলি ‘বুবি-ট্র্যাপ রোবট’: বিস্ফোরক লৌহ দানবের আতঙ্কে বাসিন্দারা

গাজার আবাসিক এলাকাগুলোতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ইসরায়েলের এক নতুন ও বিধ্বংসী অস্ত্র, যা বিমান হামলার চেয়েও ভয়াবহ বলে বর্ণনা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরাতন সামরিক যানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ভরে সেগুলোকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। স্থানীয়রা একে ‘বুবি-ট্র্যাপ রোবট’ বা ‘বিস্ফোরক লৌহ দানব’ বলে অভিহিত করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, পুরাতন ট্যাঙ্ক বা সাঁজোয়া যানে বিস্ফোরক ভরে সেগুলোকে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার ভেতরে রেখে দেওয়া হয় এবং দূর থেকে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর ফলে সৃষ্ট বিস্ফোরণে মুহূর্তের মধ্যে বহুতল ভবন ধসে পড়ছে এবং আশেপাশের মানুষ ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। একজন স্বেচ্ছাসেবী জানান, বিস্ফোরণের পর অনেক সময় নিহতদের কোনো চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায় না।

গাজার হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের শতাধিক রোবট ব্যবহার করেছে, যা ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির কারণ হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডঃ মুনির আল-বুরশ দাবি করেছেন, প্রতিটি রোবট প্রায় সাত টন পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে এবং প্রতিদিন এমন ৭ থেকে ১০টি যান বিস্ফোরিত করা হচ্ছে, যা মানবিক বিপর্যয়কে আরও ঘনীভূত করছে।

এই অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন যে, তারা অভিযান পরিচালনার কৌশল নিয়ে আলোচনা না করলেও হামাসকে নির্মূল করতে “উদ্ভাবনী” এবং ” প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত” পদ্ধতি অবলম্বন করছে।

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরাসরি সংঘর্ষ এড়িয়ে নিজেদের কমানো এবং অভিযানের খরচ কমানোর কৌশল হিসেবে ইসরায়েল এই রিমোট-কন্ট্রোলড বিস্ফোরক যানের ব্যবহার বাড়িয়েছে। তবে এর ফলে গাজার বেসামরিক নাগরিকরা এক অবর্ণনীয় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন এবং এই কৌশলকে “গণহত্যা সংঘটন এবং আবাসন অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস” করার উপায় হিসেবে দেখছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।