BMBF News

গাজীপুরে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় দায়ের করা অর্থ আত্মসাতের মামলায় সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানার যুবলীগ নেতা মোঃ আব্দুল মান্নান সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি প্রফিট এমো ফিডস লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ফিড বাকিতে গ্রহণ করে তা পরিশোধ না করে প্রতারণা এবং আত্মসাৎ করেছেন। গ্রেফতারকৃত মো. আব্দুল মান্নান সরকার সলঙ্গা থানা যুবলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা। তার বড় ভাই আব্দুল হাই সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

ভুক্তভোগী গাজীপুরের শিরিরচালা এলাকায় প্রফিট এমো ফিডস লিমিটেড কারখানায় কর্মরত এইচআর অ্যাডমিন মোঃ আবু সুফিয়ানের জয়দেবপুর থানায়কৃত অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিবাদী মোঃ আব্দুল মান্নান সরকার তার মালিকানাধীন “সরকার মৎস্য আড়ৎ”-এর জন্য তিন পাতার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটি চুক্তি করেন। সেই চুক্তি অনুযায়ী তিনি প্রফিট এমো ফিডস লিমিটেড থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার ফিড বাকিতে গ্রহণ করেন।তবে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। বরং বারবার তালবাহানা করতে থাকেন এবং পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান। অভিযোগকারী তার পাওনা টাকা আদায়ের জন্য একাধিকবার লিগ্যাল নোটিশ পাঠান, কিন্তু বিবাদী তাতে সাড়া না দিয়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, বিবাদীর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার সলঙ্গা থানাধীন শ্রী রামের পাড়া। অভিযোগকারীও একই এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক ৭টার সময় দুই পক্ষ শ্রী রামের পাড়া এলাকায় বসে আপোষ মীমাংসার জন্য আলোচনা করেন। সেই আলোচনায় বিবাদী হিসাব গড়মিলের অভিযোগ তোলেন এবং অভিযোগকারীর কর্মস্থল গাজীপুরের শিরিরচালাস্থ ফ্যাক্টরিতে এসে বিষয়টি মীমাংসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু একই দিন রাত আনুমানিক ৯টা ৩০ মিনিটে জয়দেবপুর থানাধীন শিরিরচালার প্রফিট এমো ফিডস লিমিটেড কারখানার সামনে বসে বিবাদী পাওনা টাকা পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানান। বরং তিনি অভিযোগকারী ও ফ্যাক্টরির মালিকপক্ষকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

আবু সুফিয়ান আরও বলেন, “বিবাদী প্রতারণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিশ্বাস অর্জন করে বাকিতে ফিড গ্রহণের পর টাকা পরিশোধ না করে প্রতারণা করেছেন। স্থানীয়ভাবে ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় অভিযোগকারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।”

আবু সুফিয়ান বলেন, গ্রেফতারকৃত আব্দুল মান্নান সলঙ্গা থানার যুবলীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এবং তার বড় ভাই আব্দুল হাই সলঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তিনি কোম্পানির টাকা আত্মসাতের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এই অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মো. আব্দুল মান্নান সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।