ছয় কারখানা বন্ধের নোটিশ দিল এস আলম গ্রুপ

এস আলম গ্রুপের ছয়টি কারখানা বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) থেকে বন্ধের নোটিশ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন। তবে, নিরাপত্তা বিভাগ, ডেলিভারি সেকশন এবং জরুরি বিভাগের কার্যক্রম যথাযথভাবে পরিচালিত হবে, যা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খোলা থাকবে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এস আলম পাওয়ার প্লান্ট লিমিটেডের কারখানার সব শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে বন্ধের নোটিশ জারি করা হয়।

বন্ধ ঘোষণা করা কারখানাগুলো- এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেড-নফ, এস আলম পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড, ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর মধ্যে দুটি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার কালারপুল, তিনটি ইছানগর এবং একটি বাঁশখালীতে অবস্থিত।

নোটিশে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব কারখানা বন্ধ থাকবে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় খোলার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।

কারখানা বন্ধের খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রুপটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে প্রকৃত কারণ জানতে চায়।

এস আলম গ্রুপের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, মূলত কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারা এবং ব্যাংক হিসাবের জটিলতার কারণে এসব কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, সমস্ত শ্রমিকদের বেতন স্বাভাবিক নিয়মে দেওয়া হবে এবং উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ মজুদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত চালু থাকবে।

সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে বিষয়টির সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিসিতে যাওয়ার কথা।

এ বিষয়ে সাইফুল আলম অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও একাধিক উপদেষ্টার কাছে ‘বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ’ পাঠিয়েছেন। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এস আলমের ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সাইফুল আলম আন্তর্জাতিক আইনি প্রচেষ্টা শুরু করেছেন, তবে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে নয়, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে। ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি অনুযায়ী তিনি এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এস আলম পরিবার ২০১১ থেকে সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে এবং ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তারা সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।