BMBF News

ঢাকায় চরম নৈরাজ্য: যখন তখন সংঘর্ষ-বিক্ষোভ, ইচ্ছে হলেই অবরোধ

রাজধানী ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধ এবং ডেমরায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ফলে সোমবার সকাল থেকেই যান চলাচলে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সোমবার সকাল ১০:৩০টায় ফেসবুকের একটি ট্রাফিক সংক্রান্ত গ্রুপে জীবন আহমেদ নামের একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “আগারগাঁও চৌরাস্তা বন্ধ করে রিকশাওয়ালাদের আন্দোলন শুরু। এই রাস্তা এড়িয়ে চলুন।” একই সময়ে আসিফ খান শাওন মন্তব্য করেন, “আগারগাঁও এড়িয়ে চলুন। গুলশান যাওয়ার পথ থেকে ফিরে এলাম। আগারগাঁওয়ের পর যাওয়া যাচ্ছে না।”

এ সময় ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা আগারগাঁওয়ে রাস্তা বন্ধ করে অবস্থান নিলে ওই এলাকার যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। একই সময়ে ডেমরায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সেখানকার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

গত কয়েক মাস ধরে ঢাকায় রাস্তাঘাট বন্ধ করে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে চলেছে। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন, বাসে ওঠা নিয়ে সংঘর্ষ, রিকশাচালকদের অবরোধসহ প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।

সোমবার ডেমরায় কবি নজরুল কলেজ এবং সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ডেমরা এবং আশপাশের এলাকার রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রবিবার একই সংঘর্ষের একটি অংশে সোহরাওয়ার্দী কলেজে ভাঙচুর হয়েছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাফিক সংক্রান্ত বিভিন্ন গ্রুপে দিনভর মানুষজন তাদের গন্তব্যে যাওয়ার রাস্তাগুলোর পরিস্থিতি জানতে পোস্ট করছেন। কেউ কেউ পথে রওনা দেওয়ার আগে জানতে চাইছেন, তাদের রাস্তাটি খুলে আছে কিনা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, “মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে, বিশেষত যখন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এটি উদ্বেগজনক।”

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ও মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, “আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি যাতে জনজীবনে ব্যাঘাত না ঘটে। কোথাও কিছু ঘটলেই আইনানুগভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা সবার দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।”

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু পুলিশি পদক্ষেপ নয়, জনগণের যৌক্তিক দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যদিকে, অযৌক্তিক আন্দোলন ও রাস্তা বন্ধের মতো কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন বলে মত দেন তারা।

সরকারি প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, যৌক্তিক দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে, তবে বাড়াবাড়ি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।