BMBF News

তদারকির অভাবে মানহীন-নকল পণ্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

বাংলাদেশে প্রসাধনী সামগ্রীর চাহিদা বাড়ায় বাজারে বিভিন্ন নকল, মানহীন, ভেজাল, এবং মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের প্রাচুর্য দেখা যাচ্ছে, যা ভোক্তাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, দেশি-বিদেশি বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর পণ্যের মোড়ক নকল করে বাজারজাত করা হচ্ছে এবং অবৈধ পথে মানহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, “দেশে কাস্টমসের মাধ্যমে আসা পণ্য ছাড়া বেশির ভাগ বিদেশি প্রসাধনী নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ। ভেজাল পণ্যে ব্যবহারের ফলে ত্বকে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়, যা চিকিৎসার জন্য চর্ম বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হয়।”

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, বেশির ভাগ বিদেশি কসমেটিকস পণ্য চোরাই পথে বা লাগেজে আনা হয়, যা নিম্নমানের এবং মেয়াদোত্তীর্ণ। এসব পণ্য ব্যবহারে ত্বকের ক্ষতি, ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। ডক্টর হক স্কিন ক্লিনিকের ডা. শারমীন হক বলেন, “মানহীন ভেজাল পণ্য ব্যবহারের ফলে ত্বক স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হাইড্রোকুইনোন, মার্কারি, এবং লেডের মতো ক্ষতিকর উপাদান নকল ক্রিমে ব্যবহৃত হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে চর্মরোগসহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিএসএমইউ-এর অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ শিকদার হাইড্রোকুইনোন সম্পর্কে বলেন, “এটি সুনির্দিষ্ট স্থানে রাতে ব্যবহার করা উচিত, কারণ দিনে সূর্যের আলোতে এটি দাগ সৃষ্টি করে।”

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) কর্মকর্তারা বলছেন, বৈধ পথে আসা পণ্য বিএসটিআইয়ের মান পরীক্ষার আওতায় থাকলেও, লাগেজে বা চোরাই পথে আসা পণ্য নিয়ন্ত্রণে কাস্টমসের আরও কার্যকর ভূমিকা প্রয়োজন। তারা জানান, ভেজাল ও নকল প্রসাধনীর বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করা হলেও তা যথেষ্ট নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোক্তাদেরও সচেতন থাকতে হবে। যাচাই-বাছাই ছাড়া মানহীন পণ্য কেনা থেকে বিরত থেকে স্বাস্থ্যকর ও মানসম্মত পণ্য ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।