তারল্য সংকটে থাকা ছয় দুর্বল ব্যাংককে মোট ১ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে তিনটি শক্তিশালী ব্যাংক। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এবং এক্সিম ব্যাংককে এই সহায়তা দিয়েছে সোনালী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে বৃহস্পতিবার এই তহবিল স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ইসলামী ব্যাংকও তারল্য সহায়তা চেয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক জানান, আবেদনের ভিত্তিতে এসব ব্যাংককে সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং সামনেও এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
ক্ষমতার পালাবদলের পর ব্যাংক খাতের অনিয়ম ও দুর্বলতার চিত্র প্রকাশ পায়, বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের অধীনে থাকা ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে। এসব ব্যাংক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে নামে-বেনামে ঋণ নেয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগ করে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকে নগদ অর্থ সংকট তৈরি হয়। এমনকি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে গ্রাহকরা ২০ হাজার টাকার বেশি তুলতে পারেননি। পরিস্থিতি সামাল দিতে শক্তিশালী ব্যাংকগুলো থেকে দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য তারল্য সহায়তা অনুমোদন করেন নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
কে কাকে কত দিল: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক: ৩৭৫ কোটি টাকা (সোনালী ব্যাংক); সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক: ৩০০ কোটি টাকা (সোনালী ব্যাংক ২০০ কোটি, ডাচ বাংলা ব্যাংক ১০০ কোটি); ইউনিয়ন ব্যাংক: ১৫০ কোটি টাকা (সোনালী ব্যাংক); গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক: ৯৫ কোটি টাকা (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ২০ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৭৫ কোটি); ন্যাশনাল ব্যাংক: ৩২০ কোটি টাকা (সোনালী ব্যাংক ২২০ কোটি, ডাচ বাংলা ব্যাংক ১০০ কোটি); এক্সিম ব্যাংক: ৪০০ কোটি টাকা (সোনালী ব্যাংক)।
ইস্টার্ন, সিটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, সোনালী, ডাচ বাংলা ও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ৪ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার চুক্তি করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংক এই ঋণের আওতায় আসছে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সবল ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তার উদ্যোগ নেন।