গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ত্রাণের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরপরাধ মানুষদের ওপর বর্বর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। শনিবার (৩০ নভেম্বর) একক এই হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনি। একই দিন বিভিন্ন স্থানে আরও বেশ কয়েকটি হামলায় নিহত হয়েছেন ১০০ জনের বেশি, যার মধ্যে মার্কিন দাতব্য সংস্থার চার স্বেচ্ছাসেবীও রয়েছেন।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, খান ইউনিসেও খাদ্য সহায়তার অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে ১২ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন এবং সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মীরাও রয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৩৮২ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ। ইসরাইলের বাধার কারণে অর্ধেকের বেশি ফিলিস্তিনির কাছে কোনো ধরনের খাদ্য বা চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না। শিশু ও বয়স্করা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের দাবি, উত্তর গাজায় ইসরাইল নিষিদ্ধ থার্মোব্যারিক বোমা ব্যবহার করছে। এসব বোমা ভয়াবহ তাপ ও শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে মানবশরীরকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেয়। আন্তর্জাতিক মহলে এই বোমার ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ইসরাইল এই অস্ত্র প্রয়োগ করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে হামাস।
গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছে। প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি ২০ থেকে ৩০ দিনের হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে জিম্মি বিনিময়ের বিষয়েও আলোচনা চলছে।
গাজার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে ইসরাইলি অবরোধ ও হামলা অব্যাহত থাকায় উপত্যকাটিতে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শিশুসহ সাধারণ জনগণ এই নৃশংসতার শিকার হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।