পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরিচ্যুতি ও বিভিন্ন দাবি-দাওয়ার প্রেক্ষিতে আন্দোলন চলমান রয়েছে। এর মধ্যেই আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার করার ঘটনা ঘটেছে। এ অবস্থায় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিজিসিএল) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন করে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। এ সবকিছুর ফলে দেশের বিদ্যুৎ খাতে অস্থিরতা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতের শাটডাউনের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র লোডশেডিং ও ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটছে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এদিকে, বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করে তোলার অভিযোগে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আলী হাসান মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার এসকে শাকিল আহমেদকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলনকারী কর্মীরা এক সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি জানান। তারা পল্লী বিদ্যুৎ খাতে স্থিতিশীলতা আনতে মামলা প্রত্যাহার, চাকরিচ্যুত ২৪ জনের পুনর্বহাল, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও বোর্ডের সংস্কার, এবং বিআরইবির দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছেন।
এনডব্লিউপিজিসিএল এর কর্মবিরতি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সিরাজগঞ্জ ৬৭৫ মেগাওয়াট, ভেড়ামারা ৪১০ মেগাওয়াট, রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট এবং পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বকেয়া বেতন ফেরত, ওভারটাইম চালু এবং সাপ্তাহিক ছুটির দাবি জানাচ্ছেন।
কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বিদ্যুৎ খাতের সংকট নিরসনে একটি কমিটি গঠন করেছে। তারা বলেছে, বিআরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরোধ দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
এনডব্লিউপিজিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, “আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ করতে বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করছি।”
দেশের বিদ্যুৎ খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
-বণিক বার্তা।