একটি বিশেষ চক্র ইচ্ছাকৃত ধর্মীয় উসকানি দিয়ে সমাজের শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে সংগঠনটির কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স সেলের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ দীর্ঘকাল ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই ঐতিহ্য আমাদের জাতীয় ঐক্য ও শান্তির মূল ভিত্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে একটি চক্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ধর্মীয় উসকানি দিয়ে সমাজে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিশেষ করে, ইসলাম ধর্ম, মহান আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্য ও প্রচারণা সামাজিক ঐক্যে আঘাত হানছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকে কেউ যদি ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য প্রদান করে, তবে তা দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। এ ধরনের বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সম্প্রীতি রক্ষার স্বার্থে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যেকোনো ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য শুধু ধর্মপ্রাণ মানুষের অনুভূতিতেই আঘাত হানে না, বরং এটি সামগ্রিক সামাজিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কখনোই ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করার অধিকার দেয় না। প্রকৃত মুক্তচিন্তা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি অব্যাহত রাখতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ—শিক্ষার্থী, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সচেতন নাগরিকদের বিভেদ সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে সব ধর্মের মানুষের আত্মত্যাগের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করা।
বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, “আমরা চাই, বাংলাদেশে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আরও দৃঢ় হোক এবং যেকোনো বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থ হোক। আসুন, আমরা সকলে মিলে একটি শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতিময় সমাজ গড়ে তুলি, যেখানে প্রত্যেক ধর্ম ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান থাকবে এবং জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় হবে।”