পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশে শুক্র ও শনিবার আলাদা তিন অভিযানে ২২ জঙ্গি এবং ছয় সেনা নিহত হয়েছে। আর বেলুচিস্তানে হামলায় তিন নিরাপত্তা সদস্য নিহত ও আরও তিনজন আহত হয়েছে।
দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে খাইবার পাখতুনখওয়ার ট্যাংক, উত্তর ওয়াজিরিস্তান ও হাঙ্গু জেলায় অভিযান চালানো হয়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন লিখেছে, ট্যাঙ্কের গুল ইমাম এলাকায় সেনা অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হওয়ার পাশাপাশি ছয় জঙ্গি আহত হয়েছে। আর উত্তর ওয়াজিরিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১০ জঙ্গি নিহত হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, তৃতীয় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়েছে হাঙ্গু জেলার থল এলাকায়; সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে ৩ জঙ্গি নিহত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “এ মাটির ছয় বীর সন্তান বীরত্বপূর্ণ লড়াই করে চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকার করে শাহাদাতকে বরণ করেছেন।”
বাকি হুমকি দূর করতে ওইসব এলাকায় মূলোৎপাটন অভিযান চলছে জানিয়ে আইএসপিআর বলেছে, “পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গিবাদের হুমকি নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমাদের সাহসী সেনাদের এই ধরনের আত্মত্যাগ আমাদের সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে।
প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পৃথক বিবৃতিতে অভিযানের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন এবং নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
বেলুচিস্তানে নিহত ৩
এদিকে শুক্রবার গভীর রাতে বেলুচিস্তানের দুকি জেলায় সর্দার উসমান তারিন কয়লা খনির কাছে ফ্রন্টিয়ার কর্পসের (এফসি) একটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র ব্যক্তিরা।
আক্রমণকারীরা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ও রকেট ব্যবহার করে কয়েক ঘন্টা ধরে ভারী গোলাবর্ষণ করে। তাতে দুই সেনা মারা যান এবং তিনজন আহত হন।
এর পাল্টায় নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিরোধ গড়লে হামলাকারীরাও হতাহত হয়েছে, তবে সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দুকির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন খান নাসের জানান, এ ঘটনায় দুই নিরাপত্তা কর্মী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন।
এদিকে বেলুচিস্তানের গোয়েদার শহরের দারান এলাকার একটি বাতিঘরের কাছে পাকিস্তান কোস্ট গার্ডের টহল লক্ষ্য করে একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ছোড়া হয়। তাতে এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা মারা গেছে।
শক্তিশালী এই বিস্ফোরণে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত করছে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অন্যদিকে শুক্রবার গভীর রাতে কালাতের মিরি দুর্গের কাছে একটি স্মৃতিস্তম্ভে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাতে বেলুচ সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে পরিচিত দুটি ভাস্কর্য ধ্বংস হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।