BMBF News

পায়রা নদীর গ্রাসে ২ কিঃমিঃ নিস্ব অর্ধশতাধিক পরিবার

মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

 

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাহেরচর এলাকায় চলতি মৌসুমে অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি সর্বগ্রাসী পায়রার অব্যাহত ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে অনেক পরিবার অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম আঙ্গারিয়া বাহেরচর এলাকার প্রায় ২কি.মি. এলাকা জুড়ে পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজন সরকারি রাস্তার পাশে, বিভিন্ন এলাকায় আত্বীয় স্বজনের গোয়াল ঘর, পাঁকের ঘরে কোন রকম মানবেতর জীবন যাপন করছে। আবার কিছু লোকজন পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতিমধ্যে প্রায় আড়াই কি.মি. এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এসব এলাকায় ঘর বাড়ি, মসজিদ, মন্দির, রাস্তা, পুকুর, নলকূপ, আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় ভূক্তভোগী সুধান চন্দ্র মিস্ত্রী, সুধারঞ্জন চন্দ্র মিস্ত্রীসহ অনেকে বলেন, আমাদের বাড়ি এখান থেকে ২থেকে ৩ কিমি. উত্তরে ছিল। পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বাবার আমলে ২বার এবং আমাদের আমলে ৩বার বসত বাড়ি স্থানান্তর করতে হয়েছে। বর্তমানেও ঝুঁকিতে আছি। আমাদের মত অনেকেই এখন বসত ঘর সহ সবকিছু ভেঙে সরকারি রাস্তার পাশে সরিয়ে নিতেছি। আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভাঙ্গন কবলিত ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহীন গাজী বলেন, গতকাল এক ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। সকালে খেয়াঘাট এলাকার বেশ কিছু এলাকা জুড়ে বিশাল ফাটল ধরে হঠাৎ নদী গর্ভে দেবে যায়। এতে ৩জনকে ট্রলার যোগে উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে একজন মহিলাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এযাবৎ এই এলাকার প্রায় দু’শ একর জমিসহ, ৩শতাধিক ঘর বাড়ি, ৩টি মসজিদ, ৪টি মন্দির, একটি সরকারি অফিসসহ রাস্তাঘাট পায়রা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন এলাকার লোকজন অপরের বাড়ির গোয়াল ঘর, পাকের ঘর, সরকারি রাস্তার পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কিছু কিছু লোকজন অন্যান্য এলাকায় ও চলে গেছে।
আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান সোহরাব সরেজমিনে এসে বলেন, বাহের চর মৌজায় দীর্ঘ দিন যাবৎ পায়রা নদীর অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ভাঙ্গন কবলিত অসহায়দের পুনর্বাসন এবং স্থায়ীভাবে পাইলিং ও ব্লোক ফেলে নদী ভাঙ্গন রোধে যথাযথ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহীন মাহমুদ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে, দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফ হোসেন জানান, বাহেরচরের নদী ভাঙন রোধে এর আগেও আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি চলতি বছরের নভেম্বর মাসে আবার জিওব্যাগ স্থাপন করা হবে।এছাড়াও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে।