মেহেদী হাসান,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা বাস মালিক সমিতির সদস্য শাকুর হাওলাদারের প্রতারনা মামলায় পুলিশ একজন ভুয়া সচিবসহ তিন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার গজারিয়া এলাকা থেকে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের একটি টিম এদের গ্রেফতার করে। সোমবার রাত ৯ টার দিকে পটুয়াকালী থানার ওসি মো. জসিম থানা চত্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার সাচরা গ্রামের ইমাম শাহজাদা সাইফুল ইসলাম (৫০), লালমোহন উপজেলার গজারিয়া এলাকার জসিম হাওলাদার (৩৫) ও আলমগীর হাওলাদার (৪৩)। এদের মধ্যে ইমাম শাহজাদা সাইফুল ইসলাম, নিজেকে সরকারের সচিব বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন এবং অপর দু‘জন তার সহযোগী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এদের কাছ থেকে নগদ ৪০ হাজার ৫০০ টাকা, একটি পাসপোর্ট, একটি ব্যাংকের চেক বহি, প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত একাধিক সীমসহ মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
ওসি মো. জসিম জানান, প্রায় ৬ মাস আগে চক্রের প্রধান হোতা ইমাম শাহজাদা সাইফুল ইসলামের সাথে শাকুর হাওলাদারের সাথে পরিচয় হয়। সাইফুল ইসলাম নিজেকে সরকারের সিনিয়র সহকারি সচিব পরিচয় দেন এবং সচিবালয়ে কর্মরত থাকার কথা জানান। পরবর্তীতে উভয়ের সম্পর্ক কিছুটা গভীর হলে শাকুরের স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীকে সরকারি চাকুরি ও শাকুরকে একটি ট্যাক্স ফ্রি প্রাইভেট কার দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শাকুরের কাছে ২৮ লাখ টাকা দাবি করে। শাকুর এ প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি ব্যাংকের একাউন্টে ও বিকাশ নম্বরে মোট ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ২৮০ টাকা সাইফুলকে দেয়। পরবর্তীতে চাকুরি ও ট্যাক্স ফি প্রাইভেট কার দেই দিচ্ছি বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকলে শাকুরের সন্দেহ হয়। সর্বশেষ ২৬ জানুয়ারি শাকুর পটুয়াখালী সদর উপজেলার বসাক বাজার এলাকায় কুয়াকাটা মাহসড়কের ওপর বাস মালিকদের স্থাপিত সময় নিয়ন্ত্রণ কাউন্টারে বসে মোবাইলে সাইফুলের কাছে টাকা ফেরত চাইলে সাইফুল টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে এবং শাকুরকে গালমন্দসহ ভয়-ভীতিও দেখায়। এ ব্যাপারে শাকুর ২৪ ফ্রেবুয়ারি সাইফুলসহ চারজনকে আসামি করে পটুয়াখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অবশেষে অবস্থান শনাক্ত করে ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলা থেকে চক্রের প্রধানসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, আসামিরা ধুর্ত প্রকৃতির এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে চক্রটি প্রতারনার সাথে সম্পৃক্ত। চক্রের প্রধান হোতা ইমাম শাহজাদা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দেশের বিভন্ন থানায় ১১ টি প্রতারনার মামলা রয়েছে।