নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাংস বিক্রির জন্য অনুমতিপত্র (লাইসেন্স) নিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। আর এই অনুমতিপত্র নিতে এককালিন ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে।
শুধু মাংস বিক্রি নয়, জবাইখানা ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার জন্য এই অধিদপ্তরের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিতে হবে। এতে সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে।
এই অনুমতিপত্র নিতে যে বাড়তি খরচ পড়বে তার প্রভাব ক্রেতাদের ওপর পড়বে বলে মনে করছেন মাংস বিক্রেতারা।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অফিস আদেশ জারি করেছেন।
সেটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, মাংস বা মাংসজাত পণ্য উৎপাদনের পরিমাণ প্রতি সপ্তাহে এক টনের নিচে হলে আবেদন ফি এক হাজার, অনুমতিপত্রের ফি ১৫ হাজার ও নবায়ন ফি দেড় হাজার টাকা দিতে হবে। এক টনের বেশি, কিন্তু ৮ টনের নিচে হলে আবেদন ফি দুই হাজার, অনুমতিপত্রের ফি ২৫ হাজার ও নবায়ন ফি সাড়ে সাত হাজার টাকা লাগবে। আর ৮ টন বা তার বেশি হলে আবেদন ফি তিন হাজার, অনুমতিপত্রের ফি ৭০ হাজার ও নবায়ন ফি ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১-এর ধারা ৯ এবং পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০২১-এর বিধি ১৩(১) মোতাবেক জবাইখানা বা মাংস বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপন বা মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন ও পরিচালনার জন্য লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা পশুচিকিৎসক না হলে জেলা পশু চিকিৎসা কর্মকর্তা নিবন্ধনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন।
এদিকে মাংস বিক্রেতারা বলছেন, মাংসের যে দাম, তাতে এমনিতেই ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। একটা গরু কিনলে এক হাজার টাকা হাট-বাজারে রেখে দেয়। আবার একটা গরু জবাই করলে ৫০ টাকা দিতে হয়। এছাড়া সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সের নিবন্ধন ও নবায়ন ফি তো আছেই। এ অবস্থায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর লাইসেন্স নিতে যদি আরও টাকা দিতে হয়, এর নেতিবাচক প্রভাব বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ের ওপরই পড়বে।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, পশুর রোগবালাই যেন মানবদেহে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য যত্রতত্র পশু জবাই করতে পারবেন না মাংস বিক্রেতারা। কসাইখানায় পশু নিয়ে জবাই দিতে হবে। সেখানে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে, সেগুলোর পর নিরাপদ জবাইয়ের মাধ্যমে মাংস সরবরাহ করতে হবে। আর যে ফি ধরেছি, তা সামান্য। এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
এছাড়া কতটুকু মাংস উৎপাদন হলো, বিক্রি কতটুকু হলো, কত দামে বিক্রি হলো—এসব বিষয়ও দেখভাল করা হবে। তাই আমরা লাইসেন্স দিচ্ছি। আমাদের লাইসেন্স ছাড়া কেউ ব্যবসা করতে পারবে না। তবে যারা মাংস বিক্রি করেন তাদের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এ–সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে
উল্লেখ্য, গ্রামাঞ্চলের বাজারগুলোয় মাংস বিক্রেতারা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণত নিবন্ধন করেন না। তবে সিটি করপোরেশন এলাকায় যারা মাংস বিক্রি করেন, তারা করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে থাকেন। গ্রামের মাংস বিক্রেতাদের নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য ও পশুর দেহ থেকে মানব দেহে যাতে কোনো রোগবালাই ঢুকতে না পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।