বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, এবং মতাদর্শের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের ভিন্ন মত, ভিন্ন ধর্ম, এবং ভিন্ন রীতিনীতি থাকতে পারে, কিন্তু আমরা সবাই একই পরিবারের। শত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই। আমরা সবাই বাংলাদেশি, একই পরিবারের সদস্য।”
তিনি আরও বলেন, “শপথ গ্রহণের পর থেকে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের খবর শুনে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, আমরা একই পরিবারের সদস্য।”
অধিকার সম্পর্কে তিনি বলেন, “সব দাবিদাওয়া বাদ দিলেও সবার সমান অধিকার নিশ্চিত হওয়া দরকার। এটা সংবিধান থেকেই এসেছে। নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের প্রাপ্য, এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব তা নিশ্চিত করা।”
সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, “এখনো হামলার খবর শুনছি। তাই সবাইকে নিয়ে বসেছি, এ সমস্যা থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায় তা খুঁজতে। দুর্গাপূজার সময় সরকারের উদ্যোগে এটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।”
ভুল তথ্যের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যে তথ্য পাচ্ছি তা ভুল হতে পারে। সত্য তথ্য কীভাবে পাবো, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সরকারি তথ্য সবসময় নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। তাই প্রকৃত সত্য উদঘাটনের ব্যবস্থা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যার নাম হবে নতুন বাংলাদেশ। এখানে তথ্যপ্রবাহ এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে প্রাধান্য।”
সংখ্যালঘু সমস্যা সমাধানে সত্য তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চান তিনি। ড. ইউনূস বলেন, “তথ্য সংগ্রহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তথ্যদাতা বিব্রত না হন। আমাদের একটি সত্যনির্ভর এবং সমাধানমুখী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”