ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার পদত্যাগের বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একাধিকবার জানিয়েছেন যে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। তবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মিডিয়ার সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর জানান।
সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’ ও দৈনিক মানব জমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি পদত্যাগ করে থাকেন, তাহলে পদত্যাগপত্রটি গেল কোথায়? এই প্রশ্নের কোনো সঠিক জবাব পাওয়া যায়নি। তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগেও খোঁজ নিয়েছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র থাকার কথা। কিন্তু সেখানে কোনো কপি নেই।
মতিউর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি পদত্যাগপত্রের বিষয়ে জানতে চান। প্রেসিডেন্ট আন্তরিকতার সঙ্গে তাকে অভ্যর্থনা জানান। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনো দালিলিক প্রমাণ আমার কাছে নেই।”
৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গভবনে প্রধানমন্ত্রী আসবেন বলে খবর আসে, কিন্তু পরে জানা যায় তিনি আসছেন না। প্রেসিডেন্ট বললেন, “চারদিকে অস্থিরতার খবর।” সামরিক সচিবের কাছেও কোনো খবর না পাওয়ার পর অপেক্ষা করতে থাকে।
পরে প্রেসিডেন্ট জানান, প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন। তবে এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। সেনাপ্রধানের কাছ থেকেও একই উত্তর শোনা যায়।
এদিকে, পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব আসেন। প্রেসিডেন্ট বলেন, “এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এটাই সত্য।”
পরে প্রেসিডেন্টের পাঠানো রেফারেন্সের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মতামত দেয় যে, সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, যেখানে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের চেষ্টা করছেন। তবে ভারত সরকার তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও সৌদি আরব তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে।