সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে আলোচিত জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী কামরুন নাহারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমির হোসেন জানান, দুদকের পক্ষে উপপরিচালক মো. রাশেদুল ইসলাম আদালতে এ নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন, যা মঞ্জুর করা হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এজাহারে বলা হয়, তিনি ১৮ কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ৮৮২ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তার মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আটটি ব্যাংকের ২৩টি হিসাবে ৬২৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার ১০৭ টাকা জমা হয়েছে, যার মধ্যে ৬২৪ কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৬৭১ টাকা উত্তোলন করা হয়।
দুদক আরও জানায়, ২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন ‘স্কাই রি এরেঞ্জ’ নামে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি হিসাবে ১৭৮ কোটি টাকা জমা হয় এবং প্রায় একই পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করা হয়।
এছাড়া তার স্ত্রী কামরুন নাহারের বিরুদ্ধেও ৬ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক মামলা করেছে দুদক।
২০২৩ সালের ১৪ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা তার এক সাবেক কর্মীর বিপুল সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। তিনি নাম না বললেও পরে তা জাহাঙ্গীর আলমের নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আলোচনায় আসে।
জাহাঙ্গীর নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা এবং আগে জাতীয় সংসদে দৈনিক মজুরিতে কাজ করতেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে তিনি সম্পদের মালিক হতে থাকেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১ আসন থেকে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এবং অবশেষে আদালত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।