বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে সৃষ্ট মন্দ ঋণের পরিমাণ দিয়ে অন্তত ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত বলে উল্লেখ করেছে অর্থনীতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্তে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারগুলোর সময়ে ব্যাংকিং খাতে রাজনৈতিক প্রভাব, ঋণখেলাপি, এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে দেশের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, মন্দ ঋণের পরিমাণ ২৪টি পদ্মা সেতু বা ১৪টি ঢাকা মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ ব্যয়ের সমতুল্য। প্রবাসে কর্মী পাঠানোর জন্য গত ১০ বছরে ভিসা বাবদ ১৩.৪ লাখ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হয়েছে, যা ঢাকা এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্প ব্যয়ের চার গুণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, খেলাপি ঋণের হার সাড়ে ১২ শতাংশ থেকে আগামী কয়েক মাসে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বড় গ্রুপ ও ব্যবসায়ীদের ঋণ: ২০১৭ সালের পর থেকে নেওয়া ঋণগুলোর মধ্যে আড়াই লাখ কোটি টাকা এস আলম গ্রুপসহ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে।
প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন সাথী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবেদনে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শ্বেতপত্রটি দেশের আর্থিক খাতের বর্তমান সংকট তুলে ধরেছে এবং এটি সমাধানে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে। ব্যাংক খাতের পুনর্গঠন এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।