শ্রমিক অসন্তোষের কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতে অন্তত ৪০ কোটি ডলারের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, শ্রমিক অসন্তোষের প্রভাবের কারণে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং ৫-৬ শতাংশ ক্রয়াদেশ বিদেশে চলে গেছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় বিদেশি ক্রেতারা আবারো বাংলাদেশে ফিরছেন বলে তিনি জানান।
গাজীপুর, সাভার ও আশুলিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে কিছু সহিংস ঘটনার পর বর্তমানে পরিস্থিতি স্থিতিশীল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে কিছু ক্রয়াদেশ প্রতিযোগী দেশগুলোতে চলে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৩৪ শতাংশ, যেখানে ভিয়েতনাম এবং ভারতের প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৫.৫৭ ও ১৩.৪৫ শতাংশ। এ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিজিএমইএ যৌথবাহিনী ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
অর্থ সংকটে থাকা কিছু কারখানার জন্য বিজিএমইএ সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছে। এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলোর জন্য তিন মাসের জন্য গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করার অনুরোধ জানিয়েছে।
বিজিএমইএ শিল্পের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে কয়েকটি দাবি জানিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, ব্যাংক সুদের হার কমানো, কাস্টমস প্রক্রিয়া দ্রুততর করা, এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নীতি প্রণয়ন। সংগঠনটি একইসঙ্গে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে তৈরি পোশাক খাতে সুষ্ঠু ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বজায় থাকে।