লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরও জোরদার করার হুমকি দিয়েছে। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছে তারা।
ইরান, যা হিজবুল্লাহর সমর্থক, সিনওয়ার হত্যার পর বলেছে, “এই হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ স্পৃহাকে আরও সুদৃঢ় করবে”।
সিনওয়ার, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাস যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার প্রধান হোতা ছিলেন, বুধবার গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে নিহত হন। এ ঘটনাকে ইসরায়েলের অন্যতম বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। হামাস জিম্মি করে রাখা ইসরায়েলিদের ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।”
নেতানিয়াহু সিনওয়ারের মৃত্যুর পর একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, “আজ অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেছি, কিন্তু আমাদের কাজ এখনও শেষ হয়নি।” তিনি জিম্মিদের পরিবারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “যতক্ষণ না আপনাদের প্রিয়জন ঘরে ফিরছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব।”
গত জুলাইয়ে তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার পর সিনওয়ার হামাসের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা হয়ে ওঠেন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, সিনওয়ারকে গতবছরের ৭ অক্টোবরের ‘গণহত্যা ও নৃশংসতার’ মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবার সেনারা তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন তারা।
মধ্যপ্রাচ্যে শত্রুতা বাড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে এই হত্যাকাণ্ডের পর। ইতোমধ্যে ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করেছে এবং ইরানের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েল ৪২,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতানিয়াহুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং জিম্মিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় নিহত নোয়া মার্সিয়ানোর বাবা আভি মার্সিয়ানো ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম কানকে বলেন, “যে দানবটি আমার কাছ থেকে তাকে কেড়ে নিয়েছে, অবশেষে সে নিজেই নরকের দরজার মুখোমুখি হল।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখনও স্বস্তি পাচ্ছি না। আমার মেয়ে ও তার বন্ধুদের ফিরতে হবে।”
এদিকে, গাজার দক্ষিণে খান ইউনিসে এক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি জানিয়েছেন, “ফিলিস্তিনিদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।”