নিজস্ব প্রতিবেদক :
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সার সংক্ষেপের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন কারিগরি শিক্ষা অধীদপ্তরের অধীনে রাজস্বখাতে প্রক্রিয়াধীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান সহ ৭৭৭ জন শিক্ষকের ৩৪ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও চাকরি দ্রুত রাজস্ব খাতে আত্তীকরণের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কারিগরি শাখা ও বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার ফোরামের ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কারিগরি শাখা কমিটির সভাপতি মোঃ সুমন হায়দার সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন।আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এর সুযোগ্য সন্তান অহিদুল ইসলাম তুষার, খেতাব প্রাপ্ত বীর বিক্রম মৃত শাহ আলী আকন্দ সুযোগ্য সন্তান মোহাম্মদ মেহেদী হাসান সহ বেতন বঞ্চিত শিক্ষকেরা। লিখিত বক্তব্য বক্তারা বলে,
স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (STEP) প্রকল্পের মাধ্যমে ১০১৫ জন বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং প্রকল্প মেয়াদ শেষে শিক্ষকদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রস্তাব সদয় অনুমোদন ও সরকারের থোক বরাদ্দ খাত হতে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বেতন ভাতাদির ব্যবস্থা করেছেন।
আমাদের চলমান আন্দোলন সরকার বা কোন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নয়। আমাদের এই আন্দোলন বঙ্গবন্ধুর কর্মশক্তিতে বলিয়ান শিক্ষাদর্শন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসারের এই শিক্ষার অস্তিত্ব রক্ষার-
√ সরকার দেশের কারিগরি শিক্ষার হার ২০২০ সালে ২০%, ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৪১ সালে ৫০% উন্নতি করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
← কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সমূহের মানোন্নয়ন ও শিক্ষক সল্পতা দূরীকরণের লক্ষ্যে জুলাই-২০১০ খ্রি: স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (STEP) শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করেন এবং দুই ধাপে বৃদ্ধি করে ধারাবাহিক ভাবে ৩০ জুন ২০১৯ খ্রি: ভপর্যন্ত চলমান ছিল।
. এই প্রকল্পের আওতায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সরকারের সকল বিধিবিধান (উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি, লিখিত, মৌখিক, স্ব্যাস্থা পরীক্ষা, পুলিশ ভেরেফিকেশন ও সকল কোটা পদ্ধতি) অনুসরণ করে দুই ধাপে ১০১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করা হয় (বর্তমানে কর্মরত ৭৭৭ জন) ।
√ ১১ বছরের (প্রায়) অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই শিক্ষকগণ দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সমূহের সম্পদে পরিণত হয়েছে।
√ বিগত ১১ বছরে (প্রায়) কারিগরি শিক্ষার হার এই শিক্ষকদের হাত ধরে ২% হতে ১৭% -এ উন্নতি হয়েছে, যা দেশ- বিদেশের সকল জরিপে দেশের কারিগরি শিক্ষার মানোয়রনের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। √ কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে এই প্রকল্পের শিক্ষকদের অবদান ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প শেষে শিক্ষকগণের
চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রস্তাবনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২২/০৫/২০১৯ খ্রি: সদয় অনুমোদন করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত অনুশাসনের আলোকে ৩০ জুন ২০১৯ খ্রি: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রকল্পে নিয়োজিত /কর্মরত শিক্ষকদের সাময়িকভাবে বহাল রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারী করেন।
প্রজ্ঞাপনের আলোকে ৪৯টি পলিটেকনিক সমূহের সকল কার্যক্রম অদ্যবদি যথাযথভাবে পালন করে আসছি।
√ প্রকল্প মেয়াদ শেষে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারের থোক বরাদ্দ খাত হতে ৭৮৬ জন শিক্ষকের বেতন ভাতাদিও
পরিশোধ করা হয়েছে।
√ ১৮ই-মে-২০২১ খ্রি: ৭৭৭-জন শিক্ষকের চাকরি দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের লক্ষ্যে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বরাবর ডিও পত্র প্রেরণ করেন।
√ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত সার-সংক্ষেপ অনুসরণ করে STEP শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্প হতে রাজস্বখাতে প্রক্রিয়াধীন ৭৭৭ জন শিক্ষককে চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর সম্ভব কিনা সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিগত ১৯/০৫/২০২২ তারিখে আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
• জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত পত্রের আলোকে, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বিগত ১৯ আগস্ট, ২০২২
তারিখে লিখিত মতামত “সরকার কর্তৃক গৃহীতব্য সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন তার
এখতিয়ারভুক্ত কার্যক্রম বিধি অনুযায়ী সম্পন্ন করবে”। • জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত পত্রের আলোকে, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ বিগত ২৪ অক্টোবর, ২০২২ তারিখের লিখিত মতামত ২২/০৫/২০১৯ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত সার-সংক্ষেপ অনুসরণপূর্বক ইতোপূর্বে বিধিন্ধ যে পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় অন্যান্য প্রকল্প ও প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়েছে, সেই পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিবেচ্য (STEP) প্রকল্প ও প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের লক্ষে প্রশাসনিক বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে”।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত সার-সংক্ষেপ এর আলোকে আইন মন্ত্রনালয়ের (STEP) প্রকল্প ও প্রকল্পের জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের বিষয়ে সুস্পষ্ট মতামত থাকার পরেও, রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় ধীরগতি এবং আমাদের বর্তমানে ৩৪-মাস যাবত বেতন-ভাতাদী বন্ধ। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও ৭৭৭ জন শিক্ষকের মধ্যে চরম হতাশা, ক্ষোভ ও পরিবারিক অস্থিরতা বিরাজ করছে।
অত্যান্ত দুঃখ ভরাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বলতে হচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রা প্রক্রিয়া ধীরগতির কারণে শিক্ষকদের মনে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তদুপরি জুলাই-২০১০ হতে নিে ৩৪ মাস যাবত ৭৭৭ জন শিক্ষক বেতন ভাতাদি না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ৩৪ মাস যাবত বেতন বন্ধ থাকায়, আমাদের কয়েকজন সহকর্মী টাকার অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করাতে পেরে মারাও গেছেন, আরো বহু সহকর্মী মানসিক ও শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। বিগত বেতন ভাতাদি সঠিক সময়ে প্রাপ্ত হলে, হয়ত এই পরিস্থিতিগুলো এড়ানো যেতো।
এমতবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ও ৭৭৭ জন শিক্ষকের পরিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে, আমাদের দীর্ঘদিনের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসানের জন্য মানবতার জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনে দ্রুত বকেয়া বেতন-ভাতাদি প্রদান ও চাকরি দ্রুত রাজস্বখাতে আত্তীকরণের দাবিতে আগামী ৩০শে এপ্রিল,২০২৩ তারিখ হতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর সামনে শান্তি পূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি। আমরা প্রবলভাবে বিশ্বাস করি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের মানবিক দাবি মেনে নিবেন ।
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আপনারা, আপনাদের মেধা মনন দিয়ে লেখনির মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বিষয়টি মিডিয়ায় তুলে ধরে আমাদের পাশে থাকবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ৭৭৭ জন শিক্ষকের পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।