BMBF News

কানাডায় পালানো রাষ্ট্রদূত হারুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে সরকার

মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার। কানাডায় পালিয়ে গিয়ে তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যে লেখা পোস্ট করেছেন তা গোপন উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত দেয় এবং বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে এটি করা হয়েছে বলে মনে করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্যবিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গত ১১ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন এবং মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি তার পদে বহাল থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে দায়িত্ব ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশে ফিরে আসার পরিবর্তে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তার যাত্রা বিলম্বিত করেন। মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়াই তিনি মরক্কোর রাবাত থেকে কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন। গত ৬ মার্চ তার অটোয়া থেকে ঢাকায় ফিরে আসার কথা ছিল, কিন্তু তিনি ফেরত আসেননি।

শুক্রবার তার ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে তিনি পূর্ববর্তী নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের গুণকীর্তন করেছেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছেন। তার পোস্টে হারুন আল রশিদ, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে খারাপভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও বাস্তবতাকে বিকৃত উপস্থাপন করা অগ্রহণযোগ্য এবং এটি লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।

বাংলাদেশে ফিরে এসে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তার ফেসবুক পোস্টে নিজেকে ‘নির্যাতিত কূটনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। মন্ত্রণালয় মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে।

মন্ত্রণালয় তার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর এ ধরনের কর্মকাণ্ড কোনোভাবে প্রশ্রয় দেয় না এবং ভবিষ্যতেও যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, আমাদের সমুদ্র আছে : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ তাদের একটি সমুদ্র রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারের বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বাংলাদেশের দীর্ঘ উপকূলরেখার সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, চট্টগ্রামের উপকূলে যে কোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব, যা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে আরও এগিয়ে নেবে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, কক্সবাজার এখন শুধু একটি পর্যটন শহর নয়, এটি অর্থনীতিরও কেন্দ্র হয়ে উঠছে।

নেপাল ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সেভেন সিস্টার্স) রাজ্যগুলোর কোনো সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, পারস্পরিক সুবিধার জন্য তারা বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বাণিজ্যিকভাবে সক্ষম হই, তাহলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’

প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা কি বাংলাদেশ থেকে লবণ আমদানি করতে আগ্রহী। কেননা, এখন কক্সবাজারের কৃষকরা লবণ রপ্তানির সক্ষমতা অর্জন করেছে।