শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক আগামীতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক এক কর্মশালায় অংশ নেওয়া বক্তারা। তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন নতুন ব্যবসায়িক ধারণা নিয়ে নবীন উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে এ খাতে সৃষ্ট সুযোগের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবে।
রোববার তথ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব: বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রস্তুতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কর্মশালায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য অধিদপ্তরের ইনোভেশন টিম লিডার ও সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. আবদুল জলিল। তথ্য অধিদপ্তরের সিনিয়র তথ্য অফিসার এএইচএম মাসুম বিল্লাহর সঞ্চালনায় কর্মশালায় শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) এমইউ সিকদার, আইটি ইঞ্জিনিয়ার শুকলাল কুমার, কেনার হাটের কো-ফাউন্ডার মো. নাহিদুল ইসলাম, টেকনোসফট গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজালাল, শিখো টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো. বেনজির আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য অফিসার মো. আবদুল জলিল বলেন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক দেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির সূতিকাগার। দেশ-বিদেশের আইটি শিল্প উদ্যোক্তারা আগামীতে এখানে নতুন বিনিয়োগ চিন্তা নিয়ে এগিয়ে আসবেন। এ পার্ক রাজধানী ঢাকার বাইরে যশোরে আইটি খাতে বিশাল কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। এ সফটওয়্যার পার্কের সুবিধা নিয়ে স্টার্ট আপের মাধ্যমে নতুন নতুন আইডিয়া বেরিয়ে আসবে। এখান থেকেই সফল নতুন ব্যবসার পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। তিনি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে যশোরের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্য বিপণনের জন্য উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দেন।
পার্কের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) এমইউ সিকদার বলেন, সরকার যশোরকে দেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি আইটি খাতে উদ্যোক্তা তৈরিতে এ বিশেষায়িত পার্ক স্থাপন করেছে।
বর্তমানে এ পার্কে ৫৪ জন বিনিয়োগকারী রয়েছেন। তারা মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, স্টার্ট আপ ডেভেলপমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, কল সেন্টার খাতে বিনিয়োগ করেছেন বলে তিনি জানান।
কর্মশালায় উদ্যোক্তারা জানান, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে উদ্যোক্তারা কম খরচে নিজেদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন। এখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা রয়েছে। ফলে বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠান এ পার্কে বিশাল পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আইটি খাতের স্টার্ট আপদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে অফিস পরিচালনার সহায়তা দেওয়ায় তারা সরকারের প্রশংসা করেন। তারা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য সহজ শর্তে ফাইন্যান্সিং সুবিধা প্রদান এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে অভিজ্ঞতার শর্ত শিথিল করার পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, যশোর শহরের নাজির শঙ্করপুর এলাকায় ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২ একর জমির ওপর শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপন করা হয়। কর্মশালা শেষে তথ্য অধিদপ্তরের ইনোভেশন টিমের সদস্যরা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।