BMBF News

পটুয়াখালীর দশমিনায় প্রাক্তন স্বামীর স্বীকৃতি দাবিতে তরুণীর অনশন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

রাকিবুজ্জামান দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 

 

 

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় তালাকের পরও প্রাক্তন স্বামীর স্বীকৃতি ও সংসারের অধিকার দাবিতে তার বাড়ির সামনে অনশন করছেন এক তরুণী। তবে এই ঘটনাকে ঘিরে উঠেছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ— মেয়ের দাবি, তাদের তালাক হয়নি; অন্যদিকে, ছেলের দাবি, বিয়ের চার দিন পর পারিবারিক কারণে তালাক সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে পুরো এলাকায় তোলপাড় চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বড়গোপালদী গ্রামের জাফর প্যাদা মেয়ে উর্মির সঙ্গে একই উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষীপুর গ্রামের মো. রিয়াদ হোসেনের (ডাকনাম জাহিদুল) প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রায় আট মাস ধরে। পরে চলতি বছরের ৬ অক্টোবর তারা পটুয়াখালী নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

তবে বিয়ের চার দিন পর পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে ১০ অক্টোবর উভয় পরিবারের মধ্যে বিচ্ছেদের বিষয়টি সামনে আসে। এরপর থেকে মেয়েটি আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে এবং মঙ্গলবার প্রাক্তন স্বামীর বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করে।

তরুণী উর্মি বলেন, “আমরা দুজন ভালোবেসে বিয়ে করেছি।
বিয়ের পরে আমরা একসাথে জেলা আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছি।
বিয়ের বিষয় পরিবার সম্পর্কটি মেনে নেয়নি। এখন আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। আমি শুধু স্বামীর ঘরে স্ত্রীর স্বীকৃতি চাই, অন্য কিছু নয়।”

তালাকের বিষয়ে উর্মির অভিযোগ, “তালাকের কাগজে যে স্বাক্ষর দেখানো হচ্ছে, সেটি আমার নয়। আমি কোনো তালাকে স্বাক্ষর করিনি, আমাদের তালাক হয়নি। আমাকে প্রতারণা করে আলাদা করা হয়েছে।”

অন্যদিকে, প্রাক্তন স্বামী রিয়াদ হোসেন বলেন, “আমরা দুজনের সম্মতিতেই বিয়ে করেছি। কিন্তু পারিবারিক কারণে বিয়ের চার দিন পরই তালাক হয়। আমি ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি যে সে আমার বাড়ির সামনে অনশন করছে।”

রিয়াদের বাবা কাশেম খান বলেন, “ছেলের বিয়ের বিষয়টি আমরা জানতাম না। এখন যা হয়েছে, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

এদিকে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অনেকেই মেয়েটির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে মানবিকভাবে বিষয়টির সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, “ঘটনাটি আমাদের জানা আছে। ছেলে ও মেয়ে দুজনই প্রাপ্তবয়স্ক। তারা আইনগতভাবে বিয়ে করেছে। পারিবারিকভাবে সমাধান সম্ভব না হলে আদালতের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।”