BMBF News

আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভার: পরিচ্ছন্নতার অভাবে জনদুর্ভোগ, উদাসীন নাগরিক সমাজ

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম আব্দুল্লাহপুর-টঙ্গী ফ্লাইওভার। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখর থাকলেও ফ্লাইওভারটির পরিবেশগত পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। আবর্জনার স্তূপ, যেখানে-সেখানে পড়ে থাকা খাবারের উচ্ছিষ্ট এবং ভাসমান খাবারের দোকানের কারণে ফ্লাইওভারের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যও পড়ছে হুমকির মুখে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভারের উপরে ও এর আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য মুখরোচক খাবারের ভ্রাম্যমাণ দোকান। এসব দোকানের ক্রেতা-বিক্রেতাদের ফেলা প্লাস্টিকের প্যাকেট, পলিথিন ও অন্যান্য আবর্জনায় ফ্লাইওভারের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। পথচারীদের অভিযোগ, নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা পথচলার পরিবেশকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।

যদিও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মাঝে মাঝে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ পরিচালনা করেন, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে করছেন অনেকে। এর চেয়েও বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে নাগরিক সচেতনতার অভাব। অনেক পথচারী ও যাত্রীকেই দেখা যায় ব্যবহৃত মাস্ক, খালি বোতল ও খাবারের প্যাকেট নির্দ্বিধায় ফ্লাইওভারের উপর ফেলে দিচ্ছেন। নাগরিক দায়িত্ববোধের এই অভাবকেই পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন থাকার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন সচেতন মহল।

একজন নিয়মিত পথচারী বলেন, “আমরাই তো পরিবেশটা নোংরা করছি। সরকার বা সিটি কর্পোরেশন কতবার পরিষ্কার করবে যদি আমরা নিজেরাই সচেতন না হই? এই শহরটা তো আমাদের সবার।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ। যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায়, নগরের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি তার সৌন্দর্য ও উপযোগিতা হারাবে।

সমাজের সকল স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাতে। ‘এই সমাজ ও দেশ আমাদের সকলের’ এই বোধ জাগ্রত হলেই আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভারসহ রাজধানীর অন্যান্য স্থানের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করছেন নগরবাসী।