BMBF News

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ইস্যুতে নানামুখী চাপে সরকার

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক চাপের খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সোমবার এক আলোচনায় জানান, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে সরকারকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের কথা বলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”

এদিকে, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের আন্ডার সেক্রেটারি ক্যাথেরিন ওয়েস্ট সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “আমাদের নীতি শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকারের পক্ষে।”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলছে। আইন সংশোধন করে দলটিকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলের আপত্তি রয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, “বন্ধু রাষ্ট্রগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির পক্ষে, যেখানে সবাই অংশ নিতে পারবে।”

অন্যদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান মনে করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গণতন্ত্রের ধারণা বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে পুরোপুরি মেলে না।

বিএনপি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পক্ষে কথা না বললেও দলটি আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে। তবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নই।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদও বলেন, “রাজনীতি জনগণ করবে, আইন দিয়ে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার চেষ্টা কার্যকর হবে না।”

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, “যদি আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে ফিরে আসতে চায়, তাদের অনুশোচনা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।” আন্তর্জাতিক মহল এবং অভ্যন্তরীণ চাপের এই জটিলতার মধ্যে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা সময়ই বলে দেবে। -বিবিসি বাংলা।