BMBF News

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার কফিন মিছিল

গাজীপুরে হামলায় আবুল কাশেম নামে এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে কফিন মিছিল করেছে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কাশেমের জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর লাশের কফিন নিয়ে শাহবাগের দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন: ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’
‘আমার ভাই কফিনে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ছাত্র-জনতার অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘হৈ হৈ রই রই, খুনি হাসিনা গেলি কই’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’।, “শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই চলবে”।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “গাজীপুরে অভ্যুত্থানের ৬ মাস পর আমাদের ভাইকে কুপিয়ে শহীদ করা হলো। আমরা কিছুই করতে পারলাম না। লাশ সামনে নিয়ে বিগত দিনের ফ্যাসিবাদকে মনে পড়ছে। যে আওয়ামী লীগ আমার ভাইকে শহীদ করেছে, সেই আওয়ামী লীগ এ দেশে রাজনীতি করার বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না। শহীদের লাশের শপথ করে বলছি, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। হাসিনা সেই ফ্যাসিবাদের ধারাবাহিকতায় জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালিয়েছে। তাই, এই মাটিতে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে, তাদের রাজনীতি চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তি কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিত করতে হবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, “আজ স্বাধীনতার ৬ মাস পরেও বিপ্লবীদের শহীদ হতে হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এর জবাব দিতে হবে। জুলাইয়ের একজন সৈনিক বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের কবর রচনা করা হবে। শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না, যারা বিভিন্নভাবে তাদের পক্ষ নিয়েছে, প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করতে হবে। যদি তা না করা হয়, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা বিপ্লবকে সম্পন্ন করতে আইন হাতে তুলে নেবে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আজকেই ‘আয়নাঘর’ প্রকাশিত হয়েছে, আজকেই অভ্যুত্থান বিষয়ক জাতিসংঘের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, আজকেই আমাদের ভাই শহীদ হলেন। বিপ্লবী ভাইয়ের শাহাদাত আমাদের ব্যর্থতা। আমরা এতদিন পর্যন্ত সুবিচার নিশ্চিত করতে পারিনি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারিনি।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের পর এ ভূখণ্ডের দখল আমরা পেয়েছি। ৫ আগস্টের পরে হয় আমরা থাকব, না হলে আওয়ামী লীগ থাকবে। বিপ্লবীরা এবং আওয়ামী লীগ একসঙ্গে এ দেশে থাকতে পারে না। আমরা স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর শাস্তি নিশ্চিত করুন এবং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।”

কাশেমের মৃত্যুর ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। কর্মসূচি অনুযায়ী- সারা দেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে শহীদ আবুল কাশেমের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে খাটিয়া মিছিল করা হবে।