উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। রাজ্যের জিরিবাম জেলা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি থমথমে।
৭ নভেম্বর জিরিবাম জেলার জাইরন গ্রামে ৩১ বছর বয়সী এক জনজাতি নারীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র হামলাকারীরা তাকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারে। তার দেহের ৯৯ শতাংশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়।
এরপরই ৯ নভেম্বর বিষ্ণুপুর জেলায় মেইতেই সম্প্রদায়ের এক কৃষক নারীকে গুলি করে হত্যা করে দুষ্কৃতকারীরা। অভিযোগ ওঠে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত কুকি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ২০ কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করেছে, যার মধ্যে ১৫ কোম্পানি সিআরপিএফ এবং ৫ কোম্পানি বিএসএফ। বর্তমানে রাজ্যে সশস্ত্র বাহিনীর সংখ্যা ২১৮ কোম্পানিতে উন্নীত হয়েছে।
গত বছরের মে মাস থেকে জাতিগত সহিংসতায় মণিপুর বিপর্যস্ত। মেইতেই সম্প্রদায় রাজ্যের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ এবং মূলত উপত্যকা অঞ্চলে বসবাস করে। অপরদিকে, কুকি এবং নাগা সম্প্রদায়ের লোকজন জঙ্গলঘেরা পার্বত্য এলাকায় বাস করে এবং তারা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ।
এ পর্যন্ত সংঘর্ষে ২৬০ জন নিহত এবং অসংখ্য মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। প্রতিনিয়ত সহিংসতার ঘটনায় রাজ্যের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
মণিপুরের চলমান উত্তেজনা দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বৈরিতার প্রতিফলন। এই সমস্যার সমাধানে সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।