নিজস্ব প্রতিবেদক:
এ্যানি-খোকনসহ ৫ জনের ডিভিশন বিষয়ে রিটের আদেশ রোববার
বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ দলটির পাঁচ নেতাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
এরই মধ্যে কারাগারে আসামিদের ডিভিশন দেওয়ার বিষয়ে কী অগ্রগতি, তা রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল ও ব্যারিস্টার ফজলুর রহমান মণ্ডল জুয়েল।
শুনানিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ছাড়াও শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আওলাদ হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আওলাদ হোসেন।
গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা পৃথক রিট করেন। রিটে এ্যানিসহ পাঁচ নেতাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
ডিভিশন চাওয়া বাকিরা হলেন- ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, বরিশালের আবুল হোসেন ও ঢাকার সাবেক মেয়র আব্দুস সালাম। বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল রিট আবেদনের বিষয়টি জানান।
গতকাল বুধবার ডিভিশনের বিষয়টি শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানি ও আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর বেঞ্চ।
এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আটক করা হয় শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, খায়রুল কবির খোকনসহ ৪৫০ জনকে। পরে জামিন নামঞ্জুর করে ৪৪৫ জনকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
গত মঙ্গলবার মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের ডিভিশন চাওয়া হয়। একই দিন আরও ৫ নেতার ডিভিশন চেয়ে আবেদন করা হয়।
ডিভিশন নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিএনপির এই দুই নেতার পক্ষে পৃথক দুটি রিট করা হয়। মির্জা ফখরুলের জন্য কারাগারে ডিভিশন চেয়ে তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম রিট করেন। আর মির্জা আব্বাসের ডিভিশন চেয়ে রিট করেন তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস। কিন্তু ওই দুটি রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
রিটের বিষয় জানিয়ে তাদের আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস উভয়ই সাবেক মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য। এ কারণে আইন অনুসারে তারা কারাগারে ডিভিশন সুবিধা পাওয়ার অধিকারী। অথচ কারা কর্তৃপক্ষ তা উপেক্ষা করে তাদের সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার খর্ব করেছে। তাই পৃথক দুটি রিট করা হয়েছে।
এর আগে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের বাসায় গত বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে পৃথক অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে।
বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর দুজনকে গ্রেফতারের কথা জানায় ডিবি। তখন ডিবি আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছিল, ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা, উসকানিদাতা, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশত আহত হন। ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এতে দুই হাজার ৯৭৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। তবে নাম উল্লেখ করা বিএনপির নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস ছিলেন না।