কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার আকবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হত্যাকান্ডে জড়িত খুনীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। রোববার (৯ আগস্ট) দুপুরে শহরের কসবা-আখাউড়া সড়কে দাড়িয়ে এই কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন এলাকাবাসী। এসময় প্রকৃত আসামীদের বাদ দিয়ে মনগড়া মামলা লিখে ওই কাগজে নিহতের স্ত্রীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেনের অপসারণের দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।
নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া বেগম বলেন, তার স্বামীর নিখোঁজের জিডি করতে গিয়েও তিনি বিড়ম্বনার শিকার হন। গত ২৬ জুলাই তার স্বামী নিখোঁজ হয়। পরে ২৭ জুলাই তিনি কসবা থানায় একটি জিডি করেন। পরে ২৮ জুলাই ওসি জিডি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করেন। ২৯ জুলাই তার স্বামীর লাশ আদ্রা-অনন্তপুর গ্রামের একটি বিলে বন্যার পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পরদিন ৩০ জুলাই কসবা থানার ওসি মোহাম্মদ লোকমান হোসেন এবং কসবা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবু তাহের এর যোগসাজসে প্রকৃত হত্যকারীদের নাম বাদ দিয়ে মনগড়া একটি হত্যা মামলা তৈরি করে জাহাঙ্গীর হত্যা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে তার কাছ থেকে (নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া) জোর করে স্বাক্ষর নেয়। নিহতের বড় ভাই মোসলেম মিয়া ওসির কক্ষে ঢুকতে চাইলে তাদের ধমকিয়ে বের করে দেন।
পরে নিহতের স্ত্রী রাজিয়া বেগম ওসির এহেন আচরনে বাধ্য হয়ে ন্যায় বিচারের আশায় গত ৪ আগস্ট ইসমাইল সহ ৬ জনকে ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। বিজ্ঞ বিচারক নালিশী দরখাস্তটি জি.আর ৩৮৩/২০ (কসবা) মামলার সাথে সংযুক্ত করে তদন্ত করার জন্য অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। কিন্তু উশৃংখল আসামীরা নিহতের স্ত্রী রাজিয়া ও তার বড় ভাই মোসলেম মিয়ার বাড়িতে একাধিকবার হামলা করলেও থানায় পুনরায় অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি।
এ বিষয়ে কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো অস্বিকার করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, গ্রামের মাদক ব্যাবসায়ীদের নির্যাতনের শিকার ফারুক মিয়া, নিহত জাহাঙ্গীরের বড় ভাই মোসলেম মিয়া, চাচাত ভাই আক্কাছ মিয়া ও নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রাজিয়া বেগম। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ আসামীরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে না।