BMBF News

জনকল্যানে ডা. ওহাব মিনার

৬৬
নিজস্ব প্রতিবেদক :

 

জনকল্যানে ডা. ওহাব মিনার

অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটানো, অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার রক্ষায় যিনি সর্বদা সোচ্চার থাকেন তিনি হলেন পটুয়াখালী জেলাধীন দুমকি উপজেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, প্রফেসর ডাঃ মেজর আব্দুল ওহাব মিনার (অব.)।১৯৬২ সালে জেলার দুমকি উপজেলাধীন পাংগাশিয়া ইউনিয়নের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবা মরহুম আমজেদ আলী মিয়া ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক আর মাতা রত্মগর্ভা মেহেরুন্নেসা ছিলেন গৃহিণী।
শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে যোগদান করে কর্মজীবন শুরু করেন। মেজর পদে পদোন্নতি পেয়েই ২০০৩ সালে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহন করে মানব সেবায় নিজেকে পুরাপুরি নিয়োজিত করেন।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এ দীর্ঘ ৮বছর সহকারী অধ্যাপক হিসাবে সুনামের সহিত কাজ করেন। এরপর বাংলাদেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ গুলোতে অধ্যপনা করেন। বর্তমানে কুমুদিনী  উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনরোগ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কনস্যালটেন্ট হিসাবে কর্মরত আছেন।
সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় স্বাস্থ্য সেবায় অবহেলিত  দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিতে পটুয়াখালী জেলা শহরে  কাজী পাড়ায় পটুয়াখালী ক্লিনিক নামে প্রথম বেসরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।
দেশ ও জাতীর ক্রান্তিলগ্নে তিনি সর্বদাই সরব ছিলেন। দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় বহু পরিবারকে সহায়তা দিয়েছেন। মায়ানমার থেকে প্রত্যাখ্যাত মুসলিম শরণার্থীদের চিকিৎসা কাজে তিনি দীর্ঘদিন উখিয়া – টেকনাফ অঞ্চলে বিভিন্ন এনজিওদের নিয়ে কাজ করেছেন। মানসিকভাবে ভীষন ক্ষতিগ্রস্ত উদ্ভাস্তদের  সাইকোসোশাল সাপোর্ট প্রদান করেন।
করোনাকালীন সময়ে ৫৫টির অধিক জেলায় সিভিল সার্জনের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোতে কর্মরত চিকিৎসক,নার্সদের মধ্যে পার্সনাল প্রটেক্ট ইনস্ট্রুমেন্টস (পিপিই) বিতরন করেন।
করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া নিজ জেলা পটুয়াখালীর সদর,মৃর্জাগঞ্জ, ও দুমকি উপজেলার এক হাজার পরিবারের সদস্যদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরনের কাজটি সূচারুরুপে তদারকি করেন। নিজে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে সিএমএইচ এ চিকিৎসা নিয়ে আবার পুর্ন উদ্যামে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে সাধারন জনগনের মাঝে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যান এবং ফ্রি মাস্ক বিতরন করেন। জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন,পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ, দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অফিসার ইনচার্জ দুমকি ও মৃর্জাগঞ্জ, দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কর্মরত চিকিৎসকদের মাঝে মাস্ক ও পিপিই বিতরন করেন। পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সদস্য, দুমকি, মৃর্জাগঞ্জ ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে মাস্ক ও পিপিই পৌঁছে দেন। করোনাকালীন সময়ে পল্লী চিকিৎসকদের কথা বিবেচনায় রেখে পটুয়াখালীতে পল্লী চিকিৎসকদের মাঝে মাস্ক, পিপিই বিতরন করেন।
শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রতি বছরই কম্বল বিতরন করে থাকেন।দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম আইভি স্যালাইন সংকট দেখা দিলে ১০০০/ আইভি স্যালাইন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের নিকট হস্তান্তর করেন। আর ১০০০ স্যালাইন নিজ উপজেলা দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ডায়েরিয়া রোগীদের জন্য  এবং গ্রামের অসহায় মানুষগুলো যাতে বিনামূল্যে স্যালাইন পেতে পারে সে জন্য দুুমকি বাজার, বোর্ড অফিস বাজার, চরগরবদী ফেরীঘাট, পাতাবুনিয়া বাজারের বিভিন্ন ফার্মেসীতে স্যালাইন পৌঁছে দেওয়া হয়। করোনার দ্বিতীয় ফেইজে বেশীরভাগ রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগতেন। তাদের দূর্ভোগ লাগবে মেহের আমজাদ ফাউন্ডেশন এর আওতায় দুমকিতে বিনামুল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদান করেন। লেবুখালী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডর মানসিক রোগী সিকল বন্দী ফরিদখান কে প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার তার মালিকানাধীন হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। মেহের আমজাদ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নলদোয়ানী এলাকায় ১০টি বেকার মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে তাদের কে বিনামুল্যে সেলাই মেশিন প্রদান করেন। একজন চিকিৎসক হিসাবে হতদরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে তিনি সর্বদাই ব্যাকুল থাকেন। পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তিনি চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত মানুষের মাঝে এ সেবা পৌঁছে দিতে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করে আসছেন।
ঢাকাস্থ দুমকি উপজেলা জনকল্যাণ সমিতির অধিকাংশ সদস্যরা তাকে এ সংগঠনের সভাপতি পদে নির্বাচিতা করায় গত নির্বাহী কমিটির সভায় সকলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এতোদিন তো আমি একা ছিলাম, আজ আপনাদের মতো অভিজ্ঞ, বিজ্ঞ, দানশীল, কর্মঠ ও প্রেরণা দেওয়ার লোক পাশে দাঁড়িয়েছেন তাহলে নিশ্চয়ই দুমকি মানুষের জন্য আমরা দৃশ্যমান কল্যাণকর কিছু করতে পারবো।