এস.এম.সোহান, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফলে মসজিদের ইমাম সহ তিন জামায়াত কর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে।
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজুল ইসলাম মিরাজের নেতৃত্বে শনিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরাবাদ বাজারে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত উপজেলা জামায়াতের কর্মী ও নারায়ান পাশা মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মনিরুজ্জামান(৪০), মো. নাঈম আবদুল্লাহ( ৩৫) ও মো.আলামিনকে(৩০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও আহতদের সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী মাওলানা ওয়াজিবল্লাহ গতকাল শুক্রবার (১৮ অক্টোবর ) নারায়ান পাশা জামে মসজিদে জুম্মার খুতবায় সুন্দর সমাজ গঠনের ইসলামের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা করেন। তখন মসজিদে উপস্থিত কনকদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসনের ছেলে ছাত্রদল নেতা রাসেল জামায়াত নিয়ে আলোচনা করতে বাঁধা দেন।
এ নিয়ে মসজিদের ওই ছাত্রদল নেতা ইমামের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এ ঘটনার জেরে ঘটনার পরদিন (আজ) বেলা ১১টার দিকে ইমাম সাহেব ও তার দুই সঙ্গীকে বাজারে দেখতে পেয়ে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজ, সাবেক ছাত্রদল নেতা রাসেল সহ ২৫/৩০জন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে জামায়াত নেতা ওজিবুল্লাহ, নাইম ও আলামিনের ওপর হামলা চালায়। এসময় পিটিয়ে তাদের মাথায় ও পায়ে যখম করা হয়। এতে আলামিন গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে, এ হামলার প্রতিবাদে বিকেল ৫টার দিকে উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন উপজেলা জামায়াত ইসলামী। উপজেলা জামায়াতের আমির মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এ মিছিল বের করা হয়।
প্রতিবাদ মিছিল শেষে বিক্ষোভ সমাবেশে এ হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমির মো. রফিকুল ইসলাম।
এবিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, যাদের ওপর হামলা হয়েছে তারা জামায়াতের কেউ নন। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক আছে। হামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয় বিস্তারিত বলতে পারবেন আমার বড় ভাই, এই বলে তিনি ফোন ধরিয়ে দেন সাবেক ছাত্রদল নেতা ইউনিয়ন বিএনপির সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক রাসেল মাহমুদকে। এসময় রাসেলকে প্রশ্ন করা হলে হামলার অভিযোগ স্বীকার করে তিনি বলেন, যাদের ওপর হামলা করা হয়েছে তারা জামায়াতের লোক না। তাদের আত্মীয় স্বজন আওয়ামী লীগের নেতা। তারা আওয়ামী লীগের আমলে অনেক ভালো অবস্থায় ছিল। এখনও তারা চোখ রাঙানি দিয়ে চলবে তা হতে পারেনা। তাই এলাকার লোকজন তাদের ওপর হামলা করেছে।
এদিকে এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন জেলা ছাত্রদল। জেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেনর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পটুয়াখালী জেলা শাখার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনিদিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সংগঠনিক শাস্তিমুলক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে না, এই মর্মে আগামী ১৯/১০/২০২৪ইং তারিখের মধ্যে লিখিত ও মৌখিক ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হলো। জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোঃ মেহেদী হাসান শামীম চৌধুরী ও সদস্য সচিব জাকারিয়া আহম্মেদ আজ এই নির্দেশনা প্রদান করেন।’
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।