১৯৮১ সালের মে মাসে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে যখন হত্যা করা হয়, খালেদা জিয়া তখন নিতান্তই একজন গৃহবধূ। রাজনীতি নিয়ে চিন্তাধারা তো দূরের কথা, রাজনৈতিক কোনো অনুষ্ঠানেও তাকে খুব একটা দেখা যেত না। সময়ের পরিক্রমায় তিনি অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গৃহবধূ থেকে হয়েছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী।
ঘরে-বাইরে নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে তাকে দীর্ঘ বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। স্বামী হারানোর বেদনার মধ্যে বিএনপির হাল ধরতে হয়েছিল খালেদা জিয়াকে। সেখানেও অনেক প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয় তাকে। শুরু হয় রাজনৈতিক সংগ্রামের জীবন। টানা আট বছর রাজপথে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন খালেদা জিয়া। একসময় পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। কখনো আপস করেননি বলে তাকে আপসহীন নেত্রীর উপাধি দেওয়া হয়। দৃঢ় মনোবলের কারণে, দেশপ্রেমের কারণে, গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে দেশের মানুষ তাকে ছেড়ে যায়নি। নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতনের পর ভঙ্গুর বিএনপিকে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন, জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে যতগুলো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, সবগুলোতেই বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। মুসলিম বিশ্বে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও ইতিহাসের পাতায় রয়েছে খালেদা জিয়ার নাম।
জন্ম ও বিয়ে
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালে। বাবা ফেনীর পরশুরামের ইস্কান্দার মজুমদার ছিলেন ব্যবসায়ী। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে খালেদা তৃতীয়। ছোটবেলায় তার ডাক নাম ছিল পুতুল। ইস্কান্দার মজুমদার ব্যবসার উন্নতির জন্য যান দিনাজপুরে। ১৯৪৭ সালের পর তিনি দিনাজপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৩৭ সালের ১৯ মার্চ তার বিয়ে হয় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার তৈয়বা মজুমদারের সঙ্গে।
এদিকে, জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে দিনাজপুরে থাকার সময় খালেদার সঙ্গে বিয়ে হয়। ১৯৬০ সালের ৫ আগস্ট দিনাজপুরের মুদিপাড়ায় খালেদার বাবার বাড়িতে বিয়ের আয়োজন হয়। খালেদা জিয়ার শ্বশুর তখন বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে পারেননি, কারণ তিনি করাচিতে ছিলেন। খালেদার মা ছিলেন জিয়াউর রহমানের মায়ের দূর সম্পর্কের আত্মীয়।
খালেদা জিয়া ৩৬ বছর বয়সে বিধবা হওয়ার পর জাতির সেবায় আত্মনিবেদন করেন। এমন একটি সময়ে স্বকীয় রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করেন, যখন পুরুষশাসিত সমাজের আধিপত্য। প্রথমে রাজনৈতিক ও পরে সরকারি গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন, যা ছিল সংকটপূর্ণ সময়ে চ্যালেঞ্জ। এমন এক সময় খালেদা জিয়া দলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন, যখন দেশ এরশাদের চাপানো সামরিক শাসনে জাঁতাকলে পিষ্ট।
জিয়াউর রহমানের উত্তরসূরি ও খালেদা জিয়া
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত বিএনপি সরকারকে উৎখাত করে সামরিক আইন জারি করেন এইচ এম এরশাদ। নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক (সিএমএলএ) হিসেবে ঘোষণা করে প্রকারান্তরে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করেন। তার এই অবস্থান তাৎক্ষণিক বিএনপিকে দুর্বল করে দেয়। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিএনপি যেন দিশাহারা হয়ে পড়ে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পাশাপাশি দলীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থার সংকট প্রকট হয়ে ওঠে। নতুন বাস্তবতার পটভূমিতে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
তবে সদস্যপদ ও সমর্থকের সংখ্যা বিবেচনায় ১৯৮১ সালের মধ্যে বিএনপি দেশের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। সদস্যদের মধ্যে বহুমুখী মতাদর্শের কারণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মূলনীতির চেয়ে এমন একজন নেতা প্রয়োজন হয়ে পড়ে, যিনি জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য রাজনৈতিক উত্তরসূরি হবেন এবং স্বাধীনভাবে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। বয়োবৃদ্ধ ও অসুস্থ আবদুস সাত্তার দলকে কাঙ্খিত পথে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে নির্ভরযোগ্য একজন নেতার প্রয়োজন দেখা দেয় বিএনপিতে।
এদিকে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চৌকশ সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া সাধারণ বাংলাদেশি গৃহবধূর মতো পরিমিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানকে নিয়েই বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছিলেন। এমনকি তার স্বামী যখন ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন, তখনও খালেদা জিয়া নিজেকে রাজনীতিতে বা রাষ্ট্রীয় বিষয়ে সম্পৃক্ত করেননি। তবে ‘ফার্স্ট লেডি’ হিসেবে প্রটোকল অনুযায়ী তাকে আনুষ্ঠানিকতা বজায় রাখতে হয়েছে। বড় ছেলে তারেক রহমান ১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর এবং ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ১৯৭০ সালের ১২ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন।
বিএনপিতে যোগদান ও নিজের আত্মপ্রকাশ
জিয়ার অনুসারী ও কর্মীদের কাছে খালেদা জিয়ার পরিচিতি কম থাকলেও দলের নেতৃস্থানীয়দের কাছে তিনি সুবিদিত ছিলেন। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য তিনিই হতে পারেন নির্ভরযোগ্য কান্ডারি। বছরের পর বছর এই মূল্যায়ন সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। তার নেতৃত্বে দলটি ভেতরের ও বাইরের সব বাধা-বিপত্তি উতরে টিকে আছে। অনেক হিসাব-নিকাশের পর খালেদা জিয়াকে চূড়ান্তভাবে পছন্দ করা হয়। ১৯৮১ সালের ৩০ মে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থ্যানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর দলের ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া।
দলীয় নেতৃত্ব গ্রহণের পর খালেদা জিয়াকে পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং এরশাদের স্বৈরাচারী সরকারের কবল থেকে মুক্তির জন্য আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। দলীয় নেতৃত্ব ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে ৩৫ বছরে তিনি কেবল গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্যই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন না, বরং ঝুঁকির মধ্যেও সোচ্চার ছিলেন আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এভাবেই, ‘খালেদা জিয়া’ ও ‘বিএনপি’ সমার্থক হয়ে উঠে।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব
খালেদা জিয়া ১৯৮৩ সালের মার্চে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ওই বছরের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি আবদুস সাত্তার অসুস্থ হলে খালেদা জিয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে তিনি দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। বিএনপির সাংগঠনিক বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে দলের হাল ধরে ১৯৮৩ সালে তিনি ৭ দলীয় ঐক্যজোট গঠন করেন। শুরু করেন এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন। ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই ঐক্যজোটের মাধ্যমে তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটান। ওই সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দলের সঙ্গে যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফা আন্দোলন চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ছেদ পড়ে।
‘আপসহীন’ নেত্রীর খেতাব
নির্বাচন নিয়ে বিরোধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৫ দল ভেঙে ৮ দল ও ৫ দলে ভাগ হয়। শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে ৮ দল ও জামায়াত ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে যায়। এরপর খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ৭ দল, বাম পাঁচ দলীয় ঐক্যজোট থাকে রাজপথে। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া ‘এরশাদ হটাও’ আন্দোলন শুরু করেন। সংসদ ভেঙে দিতে বাধ্য হন এরশাদ। আওয়ামী লীগ সংসদ থেকে বেরিয়ে এলে পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। রাজপথে ৮ বছর একটানা আপসহীন সংগ্রামে ১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসে দেশবাসীর কাছে ‘আপসহীন’ নেত্রীর খেতাব পান খালেদা জিয়া।
দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলে খালেদা জিয়া হন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটানোর জন্য আন্দোলনের ডাক দিয়ে জনগণকে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনতে নেতৃত্ব দেন। অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন তিনি।
হারেননি কোনো নির্বাচনে
খালেদা জিয়া কেবল আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তা নয়, অভূতপূর্ব জনসমর্থন নিয়ে পাঁচটি আসনে জয় লাভ করেন। তিনি কোনো নির্বাচনে হারেননি। নির্বাচন যদি জনপ্রিয়তার মান নির্ধারণ করে, তবে এটি অবশ্যই একটি রেকর্ড। বাংলাদেশ বা উপমহাদেশে তার সমপর্যায়ের কোনো নেতা এ ধরনের কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি।
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করে খালেদা জিয়া তার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে সংকল্পবদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন। তবে তার সামনে দুটি সমস্যা ছিল- এরশাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া এবং দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা। এ সময় দলীয়ঐক্য একাধিকবার আঘাতের সম্মুখীন হয়, কিন্তু তিনি শক্ত হাতে সেই প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেন। তিনি রাজপথে আন্দোলন, নির্বাচনে জয়লাভ ও সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেন।
‘এক-এগারো’র পটপরিবর্তন ও ক্ষমতা হাতছাড়া
২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে বিএনপি। তবে অষ্টম সংসদের মেয়াদপূর্তির পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিরোধে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে ‘এক-এগারো’ রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে; খালেদা জিয়া ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়েন। এ সময় তাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু জুলুম-নির্যাতনের মুখে তিনি দেশ ছেড়ে যাননি। ২০০৭ সালে ৩ সেপ্টেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক বছর কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তিলাভ করেন। এর আগে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের পরের বছর জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে গুলশানে দলীয় কার্যালয়ে টানা ৯৩ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঘেরাওয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া। পরের বছরও তাকে একইভাবে ঘেরাওয়ের মধ্যে থাকতে হয়।
নিঃসঙ্গ ও যোগাযোগহীন জীবনযাপনে বাধ্য
৩৫ বছরের সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া সবসময় জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য সোচ্চার ও সংগ্রামমুখর ছিলেন। তাকে কারারুদ্ধ করা হয়েছিল, তার সভা ও মোটর শোভাযাত্রা বিরোধীদের আক্রমণের শিকার হয়। তাকে নিঃসঙ্গ ও যোগাযোগহীন জীবনযাপন করতে বাধ্য করা হয়। ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ২৩ সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং কোনোটিতেই পরাজিত হননি।
২০১৮ সালের নির্বাচনেও খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হবার কারণে নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়েন। খালেদা জিয়ার অতীত নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি বগুড়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের আসন থেকে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া ১৯৯১ সালে ঢাকার একটি আসন থেকে এবং ২০০১ সালে খুলনার একটি আসন থেকে ভোটে লড়াই করেন।
‘দেশনেত্রী’ সম্বোধন
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের ১৪ দিন আগে তিনি সারাদেশে প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেন। যখন তিনি নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতেন, তখন প্রাণপ্রাচুর্যে বলীয়ান হয়ে উঠতেন। রাত তিনটায়ও নির্বাচনী সভায় ভাষণ দিয়েছেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকতেন এবং একবার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে কঠোরভাবে তা মেনে চলতেন। বিশ্বের ১০০ জন ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় ফোর্বস ম্যাগাজিন খালেদা জিয়াকে ২০০৪ সালে ১৪তম, ২০০৫ সালে ২৯তম এবং ২০০৬ সালে ৩৩তম স্থান দেয়। ২০১১ সালের ২৪ মে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি সিনেটে গণতন্ত্রের যোদ্ধা (ফাইটার ফর ডেমোক্রেসি) হিসেবে সম্মানিত হন। দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা তাকে সম্বোধন করেন ‘দেশনেত্রী’ বলে।