BMBF News

দুমকীতে দূর্গাপূজা উপলক্ষে মন্ডপগুলোতে চলছে মহা কর্মজজ্ঞ,ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা

২১
জাহিদুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী:

 

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ও উৎসব মুখর ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গা পূজা। এই পূজাকে ঘিরে পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার প্রতিটি পূজা মন্ডপে প্রতিমায় রং তুলি’র কাজ, গেট, প্যান্ডেল, লাইটিং তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গুনরাজ বা কারিগররা দিনরাত নিরলস ভাবে নিপুণ হাতে রং এবং তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার রূপ ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ নিয়ে মহাব্যস্ত।

ইতি মধ্যে উপজেলাধীন প্রায় সকল মন্ডপের প্রতিমার মাটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চুড়ান্ত ও নিক্ষুত ভাবে মাটির প্রলেপ দেয়ার পর রং তুলিতে হরেক রকম নান্দনিক সাজে সজ্জিত করছেন বলে জানান,বিপ্লব চন্দ্র সাহা নামের এক কারিগর।

রাজাখালী সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরে কর্মরত পঙ্কজ কুমার পাল নামের কারিগর বলেন, প্রতিটি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ১২থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। মজুরি বাবদ এবছর দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির কারণে বেশি। প্রতিমার আকার আকৃতি ও কাজের উপর ভিত্তি করে ৪০-৬০হাজার টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এ বছর তিনি ছয়টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন।

দুমকী উপজেলার প্রানকেন্দ্রে অবস্হিত নতুন বাজারস্হ কেন্দ্রীয় সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিতোষ বাবু পলাশ বলেন, ইতিমধ্যে তাদের মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পন্ন হয়েছে
রাজাখালী সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের উপদেষ্টা বাবু জুরান চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সৌহার্দ্য ও সম্প্রিতির মাধ্যমেই অত্যন্ত আনন্দ মূখর পরিবেশে আমরা এবছর শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করতে চাই। দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির কারণে এবছর ব্যয় বেশি হবে বলেও জানান তিনি। এ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার হাওলাদার বলেন, সম্ভ্যাব্য প্রতিমা তৈরি, রং, ডেকরেশন, আলোকসজ্জা, বাজি বাজনা ও আপ্যায়ন বাবদ প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হবে।

মুরাদিয়ার বোর্ড অফিস বাজার সংলগ্ন দাস বাড়ি সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের সদস্য তপন দাস বলেন, বরাবরের চেয়ে এবার আমাদের আয়োজন ভালো, মা দেবী দূর্গার সন্তষ্টির জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।
এবছর দুমকি উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ১০টি মন্ডপে সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা পূজা উদযাপিত হচ্ছে। এর মধ্যে মুরাদিয়ায় ৪টি, শ্রীরামপুরে ২টি, আঙ্গারিয়ায় ২টি, লেবুখালীতে ১টি ও পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে ১টি।
উল্লেখ্য সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামীকাল ১৪ই অক্টোবর হবে মহালয়া। ২০অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। পরদিন ২১অক্টোবর সপ্তমী তিথিতে নব পত্রিকা প্রবেশান্তে সপ্তমী বিহিত পূজা।
২২শে অক্টোবর মহা অষ্টমী, সন্ধি পূজা কুমারী পূজা। ২৩শে অক্টোবর মহা নবমী পূজা এবং ২৪শে অক্টোবর দশমী বিহিত পূজান্তে দেবী দুর্গার দর্পণ বিসর্জন।

নিরাপত্তার ব্যাপারে দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সবরকম নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে উপজেলার ১০টি পূজা মন্ডপে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপত্তায় মনিটরিং করছে ।

এব্যাপারে দুমকি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আল ইমরান বলেন, ইতিমধ্যে আমরা পূজা উদযাপন কমিটির সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দু’বার এবং জেলাপ্রশাসক মহোদয়ের সভাপতিত্বে একবার মিটিং করেছি। প্রতিটি মন্ডপে পর্যাপ্ত গ্রামপুলিশ, আনসার ও পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। সামগ্রিক ভাবে সবকিছুই ভালো ভাবে চলছে।