BMBF News

বরগুনা সদরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল করে মডেল মসজিদ নির্মাণ বন্ধের দাবি

২৮১

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বরগুনা সদরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভূমি দখল করে মডেল মসজিদ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে বিগত কয়েকদিন যাবত জাতিয়প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভুক্তভোগী দিলীপ সরকার।

অনশন কর্মসূচি চলাকালীন সময় দিলীপ সরকার বলেন,
২০০৮ সাল থেকে স্থানীয় প্রশাসন এবং এমসির কাছে বার বার গিয়েছি আমাদের রেকর্ডীয় ১৪ শতক জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ অবধি এর কোন সমাধান আমরা পাইনি। বরং ২০২২ সালে আমাদের রেকর্ডীয় মালকিনাধীন ভূমিতে জোরপূর্বক মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে।

বরগুনা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু সংখ্যালঘুদের ভূমি দখলকারী একজন ভূমিদুস্য। তাকে সহযোগীতা করে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান সরাসরি এই মসজিদ নির্মানে সহযোগীতা করছেন। আমার পিতা অতুল সরকার নামীয় ১৪ শতক ভূমি যা মৌজা : বরগুনা জে এল নং: ৩০ খতিয়ান নং : এম. এ ৮৭০ এবং ২২৪- এবং ২২৫ দাগের ১৪ শতক ভূমি সদর উপজেলার সামনে অবস্থিত। বরগুনা-১ আসনের আ’লীগের সংসদ সদস্য তত্বাবধানে নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে আমাদের জমিতে একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন। আমাদের মালিকাধীন ভূমির কোন ক্ষতিপুরণ এবং অধিগ্রহণ ছাড়াই বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য কৌশলের স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় এই অপকর্মগুলো করে যাচ্ছে। ২০০৮ সাল থেকে বারবার স্থানীয় প্রশাসন ও এমপির কাছে গিয়েও কোন সমাধান পায়নি। গত ২০ মার্চ ২০২১ ইং তারিখে আমেরিকার একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ (HRCBM) এর একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এই সময় জমির মূল মালিক অতুল সরকারের পরিবার ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেন। অতুল সরকারের পরিবার জানায়- গত ১৫ বছর যাবৎ এমপি ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কোন সমাধান পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে একটি মামলা করি যা হাইকোর্টে চলমান।

HRCBM প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসে গেলে তারা জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কাওসার হোসেন ঢাকায় আছেন। নির্বাহী অফিসারে সহকারী বলেন, জমিটি অধিগ্রহণের কাজ চলছে অতুল সরকারের ছেলে দিলীপ সরকারকে পরের দিন অফিসে আসার জন্য অনুরোধ করে, তাহলে জমি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাবে এবং অধিগ্রহণের কাগজপত্রগুলো অতুল সরকারের পরিবারে হাতে তুলে দিবে। কিন্তু পরের দিন অতুল সরকারের ছেলে অফিসে গেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হুমকি দিয়ে বলে আপনি কেন মামলা করেছেন মামলা দিয়ে কী জমি আপনি পাবেন। কিছুই করতে পারবেন না-এই বলে
হুমকি দেয়।

HRCBM এর প্রতিনিধি দল বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য দেবনাথ শম্ভুর বাড়িতে গেলে এমপি জানায় জমি উদ্ধারে সকল সহযোগীতা করা হবে। কিন্তু পরের দিন গত ২১শে মার্চে ২০২৩ ইং রাতে এমপি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এবং পুলিশের উপস্থিতিতে জমির ওউপর মালিকানাধীন লিখিত সাইনবোর্ড উঠিয়ে নিয়ে যায় এবং অতুল ও তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেয় তোরা পারলে জমি আটকিয়ে রাখিস। মসজিদের ঠিকাদার কমিশনার জানাল সংখ্যালঘু পরিবারটিকে এই বলে হুমিক দেয় যে যদি কাজে বাঁধা দিস তাহলে তোদের চাঁদাবাজি মামলায় জেলে ঢুকিয়ে দেব। প্রতিনিধি দল

HRCBM এর বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানের সাথে দেখা করতে গেলে তাকে ২০০৮ সালের জেলা প্রশাসনের দেওয়া সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন করার অনুরো করলে জেলা প্রশাসক বলেন আমি মনে করি ২০০৮ সালের এই আবেদন গুলো ঠিক না, আপনারা কোর্টে গেছেন সেখান থেকে ওর্ডার নিয়ে আসেন তাহলে ভমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। HRCBM এর প্রতিনিধি দল বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমানকে প্রশ্ন করে জানতে চান যে মামলা চলমান অবস্থায় কিভাবে মডেল মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেনি।

২০০৮ সালের জেলা প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু পরিবাটি সমস্যা সমাধানের দারস্থ হলে জেলা প্রশাসনও ভুক্তভোগী পরিবারটির সমস্যা সমাধানে সুপারিশ করেন। গত ৩০শে জানুয়ারি ২০০৮ সালে উপজেলা নির্বাহী অফিস বরগুনা সদর এই বলে সপারিশ করেন যে, “যেহেতু উক্ত ০.১৪ একর জমি ব্যক্তি মালিকানাধীণ আবার উপজেলা পরিষদের সীমানার মধ্যে সেহেতু উপজেলা পরিষদের অনুকূলে অধিগ্রহন গ্রহণ করার প্রস্তাব দেয়া যায় অথবা সীমানা নির্ধারন পূর্বক উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বরগুনা সদর মহোদয়ের সম্মতি সাপেক্ষে মালিক বরাবর ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। ইহা মহোদয়ের সদয় অবগতি ও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রেরণ করা হলো ” কিন্তু আজ অবধি এর কোন বাস্তবায়ন হয়নি।