BMBF News

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ৪, গুলিবিদ্ধ ৯

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী সহিংসতা ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৪ জনে দাঁড়িয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ভয়াবহ তথ্য নিশ্চিত করেছে, যা শহরজুড়ে শোক ও আতঙ্কের ছায়া ফেলেছে।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস জানান, “সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় মোট চারটি মৃতদেহ হাসপাতালে এসেছে। তাদের প্রত্যেকের শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, এই সংঘর্ষে আহত বহু মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তবে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে আহতের সঠিক সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিরূপণ করা কঠিন।

উল্লেখ্য, এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দিনভর দফায় দফায় হামলা, পাল্টা-হামলা, অগ্নিসংযোগ ও গোলাগুলির ঘটনায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। সংঘর্ষের শুরুতে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় এবং পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িবহরেও হামলা চালানো হয়।

দুপুরে এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা ফেরার পথে তাদের ওপর পুনরায় হামলা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন প্রথমে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে। কিন্তু দিনভর বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ ও সহিংসতা চলতে থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিজিবিও মোতায়েন করা হয়।

সর্বশেষ, সন্ধ্যায় প্রাণহানির খবর নিশ্চিত হওয়ার পর সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে রাত ৮টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারির ঘোষণা দেয়। এই ঘোষণার পর পুরো শহর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাস্তাঘাট জনশূন্য এবং শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

এই প্রাণহানির ঘটনায় শহরবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।