BMBF News

গোয়েন্দা ব্যর্থতা ছিল, সাক্ষাতকারে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বীকার করেছেন যে, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে বড় একটি কারণ গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা। সম্প্রতি ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি, ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ এবং দল পুনর্গঠনের বিষয়ে তার মতামত প্রকাশ করেন।

কামাল জানান, ৭ই আগস্ট তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যান এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “গোয়েন্দা বিভাগগুলো যথাযথভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেনাবাহিনীর ডিজিএফআই, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এবং পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ- তাদের রিপোর্ট সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যায়। তবে এটি সত্য যে, গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে আমরা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়েছি।”

আসাদুজ্জামান খান কামাল অভিযোগ করেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি একটি যৌথ অভ্যুত্থানের ফল। তিনি বলেন, “ইসলামী উগ্রবাদ এবং সেনাবাহিনীর যৌথ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত আক্রমণ ছিল।”

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সময়ের এই নেতা দলের পুনর্গঠনে দেরির বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “দল পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে। এটি আমাদের একটি বড় ভুল।”

শেখ হাসিনার সঙ্গে তার যোগাযোগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ফোনে তাদের কথা হয় এবং নেত্রী তাকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। শেখ হাসিনা দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ওপর জোর দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নিজের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কামাল বলেন, তার একমাত্র ছেলে বর্তমানে জেলে আছেন এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি জানান, “আমার বিরুদ্ধে প্রায় ২৯০টি খুনের মামলা হয়েছে। এটি নিশ্চয়ই একটি আন্তর্জাতিক রেকর্ড হতে পারে।”

ভারতের সহযোগিতা প্রসঙ্গে কামাল বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং কূটনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করতে পারে। বিশেষত আদালতের কার্যক্রম পুনরায় শুরু এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়ে কামাল বলেন, “তার চেয়ারে বসার কোনো অধিকার নেই। তার উচিত পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনের সুযোগ দেয়া।”

প্রেস উইংয়ের প্রতিক্রিয়া:
তবে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে। তারা বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য মিথ্যা এবং প্রোপাগাণ্ডার অংশ।