অন্তর্বর্তী সরকার গত ১০ মাসে জাতীয় নির্বাচনের নির্ধারিত দিনক্ষণ ঘোষণা করতে ব্যর্থ হওয়ায় রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ বক্তব্য দেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “গত ১০ মাসেও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতেও। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নানা কারণে শত শত শিল্প-কলকারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এবং আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে। বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা বিরাজ করছে, অথচ জনগণের পক্ষে তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার সুযোগ নেই।
তারেক রহমান আরও বলেন, “সংস্কার নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের আপত্তি নেই। কিন্তু এ নিয়ে সরকারের অযথা সময়ক্ষেপণের বিরুদ্ধেই আপত্তি রয়েছে। প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে সরকার যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তবে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। এমনকি অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মধ্যে একমত থাকলে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।”
তিনি অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের নির্ধারিত দিনক্ষণ ঘোষণার আহ্বান জানান।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সর্বাগ্রে বিবেচনা করুন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাধারণ জনগণের কোনও যোগাযোগ নেই। তারা শুধু অফিসে বসে ফাইল দেখে সমস্যার সমাধান করতে চান। জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাহলে তো রাজনীতি বা রাজনৈতিক দলের দরকারই হতো না।”
তারেক রহমানের অভিযোগ, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এদিনের আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রেকর্ডকৃত ভিডিওবার্তা প্রচার করা হয়। এতে তিনি বলেন, “যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তিনি (জিয়াউর রহমান) শাহাদাৎ বরণ করেছেন, সেই গণতন্ত্র আজও প্রতি পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা খুব শিগগিরই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাব।”