২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন দেশের ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ ভোটার। একই সঙ্গে ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোটার জানিয়েছেন, তারা ভোট দিতে আগ্রহী।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর দ্য ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ইনোভেশন কনসালটিংয়ের পরিচালিত ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে, রাউন্ড–২’ প্রতিবেদনের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জরিপের প্রধান সমন্বয়ক মো. রুবাইয়াত সরোয়ার মূল ফলাফল তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গোলটেবিল বৈঠকে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষক ড. সাইমুম পারভেজ, বিডিজবস ডটকমের প্রধান নির্বাহী এ কে এম ফাহিম মাশরুর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রশনা ইমাম এবং ব্রেইনের নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
জরিপে দেশের ১০ হাজার ৪১৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মতামত নেওয়া হয়। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ উঠে এসেছে।
জরিপের মূল ফলাফলগুলো হলো:
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা: ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সরকারের কার্যক্রমকে ‘ভালো’ বা ‘মধ্যম মানের’ বলেছেন। তবে তরুণ, শিক্ষিত ও নগরবাসীর সন্তুষ্টি তুলনামূলক কম।
নির্বাচন ও নিরাপত্তা: ৬৯ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন অন্তর্বর্তী সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ মনে করেন তারা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন। তবে তরুণ ও নগরবাসী পুলিশ-প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বেশি সংশয়ে আছেন।
আইনশৃঙ্খলা: ৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ মনে করেন গত ছয় মাসে চাঁদাবাজি বেড়েছে, বিশেষ করে নগর এলাকায় তরুণ ও উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ ধারণা প্রবল। তরুণদের বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে প্রধান তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
নির্বাচনের সময়সূচি ও অংশগ্রহণ: ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ উত্তরদাতা নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে শিক্ষার্থী, উচ্চশিক্ষিত ও কিছু পেশাজীবীর মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে আপত্তি বেশি।
নির্বাচনী সংস্কার: সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি সম্পর্কে ৫৬ শতাংশ অবগত নন। তবে যারা জানেন, তাদের মধ্যে সমর্থন বেশি। তরুণ ও উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা তুলনামূলক বেশি।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একই সঙ্গে নির্বাচনী সংস্কারে সচেতনতা বাড়ানো এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার ওপরও জোর দিয়েছেন।