BMBF News

বিএনপির সঙ্গে সরকারের দূরত্ব বাড়ছে, ছাত্রদের অবস্থানও স্পষ্ট

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনীতিতে সরকারের ছাত্র প্রতিনিধিরা এবং বিরোধী দল বিএনপির মধ্যে একাধিক ইস্যুতে মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়েছে। নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন, এবং সাংবিধানিক সংস্কার ইস্যুতে বিরোধীদলীয় নেতা ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে আরও তিক্ততা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন এবং সংস্কারের বিষয়ে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে বলেন, “জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্রুত আয়োজন করতে হবে, এবং তা স্বাধীন ও সুষ্ঠু হবে বলে নিশ্চিত করতে হবে।” অন্যদিকে, সরকারের ছাত্র প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম দাবি করেছেন, “গণঅভ্যুত্থান ছাড়া কোনো নির্বাচনের ব্যবস্থা হতে পারে না। সরকার একসঙ্গে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন তিনটি বিষয়ই বাস্তবায়ন করবে।”

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন ও জুলাই ঘোষণাপত্র ইস্যুতে বিএনপির ভূমিকা একপেশে হয়ে উঠেছে। ছাত্র প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতি পরিবর্তনের পক্ষে শীর্ষ আন্দোলন করলেও বিএনপির পক্ষ থেকে এর বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নেয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “রাষ্ট্রপতি অপসারণের জন্য কোন সাংবিধানিক বিধি নেই। আমরা এই প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করব না।”

এছাড়া, ছাত্র সংগঠনগুলোর জুলাই ঘোষণাপত্রে চরম বিরোধিতা প্রকাশ করেছে বিএনপি। ছাত্রদের অভিযোগ, বিএনপি তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করে তাদের বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে।

ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা থাকলেও, বিএনপি এই উদ্যোগকে নাকচ করেছে। নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, “যদি কেউ দল গঠন করতে চান, তবে তাদের সরকার ছাড়তে হবে, কারণ সরকারে থেকে দল গঠন অসম্ভব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জোবাইদা নাসরীন মনে করেন, “বিএনপি ও ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে এমন সাংঘর্ষিক অবস্থান দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।” অপরদিকে, অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান মন্তব্য করেন, “যতক্ষণ না উভয় পক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়, ততদিন এই দূরত্ব বাড়তেই থাকবে এবং তা জনমনে অস্থিরতা তৈরি করবে।”

বিএনপি এবং সরকারের মধ্যে বিরোধ ও মতপার্থক্য ক্রমেই গভীর হচ্ছে, বিশেষ করে ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে। আগামী দিনে এই রাজনৈতিক অস্থিরতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, যা দেশের নির্বাচনী পরিবেশ ও সাধারণ জনগণের মধ্যে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে।