রাজধানী গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভ্যাট না বাড়িয়ে সরকারের অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পরিচালন ব্যয় কমানো এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলোকে দেওয়া ঋণ বাজেট কমানোর দিকে নজর দেওয়া উচিত। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের সর্বপ্রথম নজর দেওয়া উচিত খরচ কমানোর দিকে। অপ্রয়োজনীয় ও আর্থিকভাবে অযৌক্তিক প্রকল্প বাদ দিয়ে উন্নয়ন বাজেট পুনর্বিবেচনা করলে প্রায় ২০ শতাংশ খরচ কমানো সম্ভব। এতে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।”
তিনি আরও বলেন, “পরিচালন ব্যয়ে যদি সরকার স্থানীয় সরকারের বাজেট এবং ভর্তুকি খাতে খরচ কমায় এবং মোট পরিচালন ব্যয় ১০ শতাংশ কমায়, তাহলে ন্যূনতম ৫০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া ঋণের বাজেট কমিয়েও সাময়িকভাবে ব্যয় সাশ্রয় করা যেতে পারে।”
মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, “২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ৫০,৮৭৫ কোটি টাকা ঋণ বাজেট করা হয়েছিল। এই বাজেট পুনর্বিবেচনা করলে মোট ১ লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “সরকারের খরচ কমানোর এই উদ্যোগগুলো জনগণের ওপর করের বোঝা কমাবে এবং অর্থনৈতিক চাপ লাঘব করবে। এতে দেশের সার্বিক অর্থনীতির উন্নয়ন হবে এবং সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে স্থিতিশীলতা লাভ করবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর। ভ্যাটের হার বাড়িয়ে জনগণের ওপর অতিরিক্ত চাপ দেওয়া কোনোভাবেই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। এই ভ্রান্ত নীতিমালা জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বাড়াবে এবং মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটাবে।”
পরোক্ষ কর না বাড়িয়ে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “পরোক্ষ কর নিম্নবিত্তসহ সকল শ্রেণির মানুষকে প্রভাবিত করে। তাই চলমান আর্থিক সমস্যার সমাধানে সরাসরি কর বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা পুনর্বিন্যাস করা যেতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।