শরীয়তপুরের নড়িয়ায় আবু সিদ্দিক ঢালী (৫৫) নামে এক বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে হামলার শিকার হওয়ার পর শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহতের পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক ও তার ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইসমাইল হকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে তারা দাবি করছেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের চান্দনী গ্রামের বাসিন্দা আবু সিদ্দিক ঢালী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার ভাই জুলহাস ঢালী ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি। একই এলাকার মিন্টু ছৈয়ালের সঙ্গে তাদের পুরনো বিরোধ ছিল।
অভিযোগ অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে আবু সিদ্দিক বাড়ি ফেরার পথে মিন্টু ছৈয়াল ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকলে প্রাণ বাঁচাতে তিনি পাশের একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। কিন্তু হামলাকারীরা পুকুরের অপর পাড়ে গিয়েও তাকে পুনরায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান। শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের ভাই ও ভোজেশ্বর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি জুলহাস ঢালী বলেন, “আমার ভাই বাড়ি ফেরার পথে মিন্টু ছৈয়াল ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।”
নিহতের মা আমিরন বিবি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ছেলেটা খুব সহজ-সরল ছিল। যারা আমার ছেলেকে এভাবে মারল, আমি তাদের কঠিন বিচার চাই। আর কোনো মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়।”
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শরিফ ওয়াহিদুজ্জামান উজ্জ্বল অভিযোগ করে বলেন, “হামলাকারীরা সাবেক আইজিপির পালিত সন্ত্রাসী। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, অপরাধী যেই দলেরই হোক না কেন, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হোক।”
ঘটনার বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, “খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”